Ajker Patrika

বন্যায় ম্লান ঈদের প্রস্তুতি

শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার
বন্যায় ম্লান ঈদের প্রস্তুতি

বন্যা নিয়ে শঙ্কা কাটছে না সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বাসিন্দাদের। নতুন করে পানি বাড়ার খবরে উদ্বিগ্ন এখানকার মানুষ। ঈদুল আজহার আর হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। কিন্তু এখনো কোরবানির পশুর হাট বসা, বিপণিবিতানের প্রস্তুতিসহ অন্যান্য কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। বন্যার কারণে কোথাও ঈদুল আজহা নিয়ে নেই কোনো পদক্ষেপ। ভয়াবহ বন্যার কারণে উপজেলায় থমকে আছে কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি।

জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে কমপক্ষে ১৫ দিন আগে থেকেই উপজেলাজুড়ে শুরু হয়ে যেত কোরবানির প্রস্তুতি। গত দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে কোরবানির পশুর হাট বসানো হয়। তবে শেষ সময়ে পশু বেচাকেনা নিয়ে হুড়োহুড়িতে পড়তে হয় তাদের। তবে বন্যার কারণে বিয়ানীবাজারে এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবার পৌরশহরের পিএইচজি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠসহ আরও দুটি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর চিন্তা ছিল প্রশাসনের। কিন্তু বন্যা সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে।

খামারি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানকার গোচারণ ভূমি এখনো পানিতে নিমজ্জিত। ফলে গবাদিপশু নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। মানুষের যেখানে বাঁচা দায়, সেখানে গোখাদ্যের সংকট কীভাবে কাটাবেন—সেই ভাবনায় রয়েছেন অনেকে। তবে অনেক এলাকায় কচুরিপানা খাইয়ে গবাদিপশুকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদুল আজহায় বিয়ানীবাজারের থাকা ১৪টি পশুর হাট জম উঠবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কিত ক্রেতা-বিক্রেতা।

গরু ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা জানিয়েছেন, উপজেলার পূর্ব মুড়িয়া, আলীনগর, চারখাই, শেওলা ও দুবাগ ইউনিয়নে বেশির ভাগ গরু লালন-পালন করা হয়। এখানকার গবাদিপশুর খাদ্যের প্রধান উৎস খোলা মাঠের ঘাস। কিন্তু চলতি বছরে তিন দফা বন্যায় তলিয়ে রয়েছে মাঠঘাট। ফলে গবাদিপশুর খাদ্যাভাব চরম আকার ধারণ করেছে। তাঁরা এখন নিজেদের গরু বাঁচানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা বলেন, বন্যায় একদিকে পশু চারণভূমি তলিয়ে গেছে, অন্যদিকে নষ্ট হয়েছে পশুর খড়। এ অবস্থায় নিজেদের খাবার জোটানোর পাশাপাশি গোখাদ্যের জোগান দেওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারিভাবে গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা এখনো কৃষকের কাছে পৌঁছায়নি।

এদিকে বন্যার কারণে বেচাকেনা কম হওয়ার আশঙ্কা জেঁকে বসেছে বিভিন্ন বিপণিবিতানের মালিকদের মনে। এ কারণে দোকানে মালামাল তুলছেন না অনেকেই। আগে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এমন সময়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কাপড়, জুতা, কসমেটিকস, মুদিপণ্যসহ নানা ধরনের সামগ্রী কিনতে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়তেন। এবার ব্যবসায়ীরা সে ঝুঁকি নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। 
পৌরশহরের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী কাওছার আহমদ জানান, এমন সময়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসতেন। কিন্তু বন্যার পানির কারণে তাঁদের আসা-যাওয়া না থাকায় ঈদের রেশ নেই।

পোশাক ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদুল আজহায় নতুন পোশাক আনার জন্য আমাদের লোক ঢাকায় বসে থাকত। এবার কাউকে পাঠাইনি।’

স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে গিয়ে জানা যায়, প্রবাস থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা এখনো অনেক কম। অন্যান্য বছর এমন সময়ে রেমিট্যান্স নিতে ব্যাংকগুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এবার কোনো ব্যাংকেই তা লক্ষ করা যায়নি।

জানতে চাইলে বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী সংকট নিরসন কমিটির সদস্যসচিব নজরুল হোসেন বলেন, ‘বন্যায় বিপর্যস্ত এই অঞ্চলের 
মানুষ। এরপরও আশা করি, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য জমে উঠবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

বিএনপি নেতা নাছিরের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দুই সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত