Ajker Patrika

বৃষ্টি হোক না হোক জলাবদ্ধতা আছেই

জহিরুল আলম পিলু, কদমতলী
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১১: ০৩
বৃষ্টি হোক না হোক জলাবদ্ধতা আছেই

শুষ্ক মৌসুমে নগরের বিভিন্ন সড়কে ধুলাবালু ওড়ে। অথচ জুরাইন থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশ পানির নিচে তলিয়ে থাকে। আর বর্ষার বৃষ্টিতে এ সমস্যা আরও প্রকট হয়। পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার অভাবে দুই বছর ধরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। পানি সরতে না পারায় ড্রেনের নোংরা পানি রাস্তায়ও ওঠে আসে। এতে তীব্র জলাবদ্ধতা ভোগান্তির পাশাপাশি নানা রকম পানিবাহিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল ৫-এর আওতাধীন ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুরাইন আলম মার্কেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে শ্যামপুর বড়ইতলা ও মোহাম্মদবাগ পর্যন্ত সড়কে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুই পাশের আলম সুপার মার্কেট, আলমবাগ সুপার মার্কেট ও রেজিয়া আলম সুপার মার্কেটের প্রায় ৯ শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া, সড়কের পাশেই হাজেরা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রতিদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। জরুরি প্রয়োজনে বের হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নোংরা পানির কারণে জ্বর ও চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। হাজেরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আলমবাগ সুপার মার্কেটের রাস্তাটি কলকারখানার দূষিত পানিতে অন্তত ৬ মাস পানিতে ডুবে থাকে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটুপানির বেশি হয়। পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি না হলেও এ রাস্তায় পানি ওঠে। নোংরা-ময়লা পানির কারণে অনেকেই চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সড়কটির দুই পাশে রয়েছে আলম সুপার মার্কেট, আলমবাগ সুপার মার্কেট ও রেজিয়া আলম সুপার মার্কেট। ৩ মার্কেটে পাইকারি জুতা, কসমেটিকস, কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের প্রায় সাত শতাধিক দোকান রয়েছে। আলম সুপার মার্কেটের লামিয়া শু স্টোরের মালিক ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাটা প্রায়ই ডুবে থাকে। এর সঙ্গে যোগ হয় নোংরা পানির দুর্গন্ধ। এমন পরিবেশে ক্রেতা আসতে চান না। তা ছাড়া, বৃষ্টি হলে আমরা দোকানই খুলতে পারি না। লোকসান যাচ্ছে আমাদের।’ নোয়াখালী শু স্টোরের স্বত্বাধিকারী ফজলুল আমিন জানান, পাঁচ-ছয় মাস ধরে রাস্তায় পানি আগের চেয়ে বেড়েছে। জুরাইন আলমবাগ এলাকার পানির চাপ নিতে পারছে না ড্রেনেজব্যবস্থা। বৃষ্টি হলে তো এ সমস্যা আরও প্রকট হয়।

জুরাইন আলম মার্কেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, ‘রাস্তায় পানি ওঠে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ড্রেনেজব্যবস্থা সংস্কার করে আমাদের পানিবন্দী জীবনের অবসান হোক। এটাই দাবি আমাদের। তা না হলে লোকসান গুনতে গুনতে একদিন দোকানই ছেড়ে দেবেন অনেক ব্যবসায়ী।’

জনদুর্ভোগ নিয়ে জানতে চাইলে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজি মো. মাসুদ বলেন, ‘জুরাইনে আলমবাগ এলাকাটি ডিএনডি অধ্যুষিত এলাকা। স্বাধীনতার পর থেকেই আলমবাগ আলম সুপার মার্কেটের সামনে জলাবদ্ধতা হয়ে আসছে। বৃষ্টি হলে অবস্থার আরও অবনতি হয়। এতে ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতি হচ্ছে। তা ছাড়া, এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা কাপড় ভিজিয়ে সড়ক দিয়ে চলাচলের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিষয়টি মেয়রকে (শেখ ফজলে নূর তাপস) জানানো হয়েছে। মেয়র নিজে এসে দেখেও গেছেন ।’

ডিএসসিসির অঞ্চল ৫-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কটিতে জলাবদ্ধতার বিষয়ে আমাদের জানা আছে। শিগগির সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত