Ajker Patrika

সড়ক সংস্কারে যেনতেন কাজ, অনিয়মের অভিযোগ

রুদ্র রুহান, বরগুনা
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৩৩
সড়ক সংস্কারে যেনতেন কাজ, অনিয়মের অভিযোগ

বরগুনার বেতাগীতে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক নির্মাণকাজে সঠিক মানের অভাব, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে সড়কটির প্রাক্কলন অনুসারে সংস্কারকাজ হচ্ছে না।

বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (পিআইও) কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের জুন মাসে হোসনাবাদ ইউনিয়নের বয়াতি বাড়ি পুলঘাট থেকে বাঁধঘাট বাজার পর্যন্ত মোট ২ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করে। রাস্তার পুরোনো সামগ্রী অভ্যন্তরীণ রেখে যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫১১ টাকা। আর এ রাস্তা সংস্কারের কাজ পায় বরগুনার ‘সার্ক এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য, তারা কাজটি বেতাগী উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহআলম রুবেল নামের এক ঠিকাদারের কাছে চুক্তিভিত্তিক বিক্রি করে দেয়। প্রাক্কলনের রাস্তার দুই পাশের সাপোর্ট হিসেবে মাটির কাজ বাবদ মোট বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৫৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তায় উভয় পাশে মাটির তেমন কাজ হয়নি। এ ছাড়া প্রাক্কলনে রাস্তার দুই পাশের এজিনের (পার্শ্বপ্রাচীর) ইট ৫ ইঞ্চি প্রস্থে বসানোর কথা থাকলেও বাস্তবে পুরো রাস্তার এর প্রস্থ ৩ ইঞ্চি। ২ হাজার ৬০০ ফুট রাস্তার মধ্যে ১১টি নরম স্থানে মাটি দিয়ে ঢালাইয়ের কথা উল্লেখ থাকলেও লোকাল বালি দিয়েই তা করেন ঠিকাদার। কাজের প্রাক্কলন অনুযায়ী রাস্তার পুরোনো সামগ্রী (খোয়া, ইট, বিটোমিন মাখা পাথর ও ইট) রোলার দিয়ে মিশিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এর ওপর কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি বালুর আস্তরণ এবং সর্বশেষ তার ওপর ৪ ইঞ্চি মানসম্মত ইটের ‘মেকাড্যাম’ (ইটের বড় খোয়ার সঙ্গে পানি মিশ্রণ) ফেলে রোলার করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদার পুরোনো ইট দিয়ে দুই পাশে এজিন (পার্শ্বপ্রাচীর) বসিয়েছেন।

এলাকার বাসিন্দা মো. লিটন সিকদার বলেন, ‘আমরা নির্মাণকাজে বাধা দিলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসে। একাধিকবার পরিদর্শনে আসেন, কিন্তু রাস্তার কাজে কোনো পরিবর্তন আসছে না।’

বরগুনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সার্ক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি কাজটি বেতাগী উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহআলম রুবেলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। বিষয়টি এলজিইডির কর্মকর্তারা জানেন। ’

ঠিকাদার শাহআলম রুবেল বলেন, ‘আমার কাজ শতভাগ সঠিকভাবে হচ্ছে। আমি কোনো অনিয়ম করিনি।’

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রইসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাস্তার কাজ ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছি। অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত