Ajker Patrika

‘বাইচ্চাগুলার মুখে একটু মাছ-মাংস দিতি পারি নে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১৪: ১৯
‘বাইচ্চাগুলার মুখে একটু মাছ-মাংস দিতি পারি নে’

বছর দেড়েক আগে গাইবান্ধা থেকে ঢাকা এসে বসবাস শুরু করে মোমেনা আক্তারের পরিবার। এই দেড় বছরে মাত্র এক দিনই গরুর মাংস খেতে পেরেছে তারা। সেটাও গত কোরবানির ঈদে। সাত সদস্যের এই পরিবারের সবার পাতে মুরগির মাংস উঠেছে চার-পাঁচবার। তবে তা গত তিন মাসের মধ্যে নয়। এই সময়ে তারা মাছ এবং ডিমের স্বাদও নিতে পেরেছে কদাচিৎ।

পেশায় গৃহকর্মী মোমেনা আক্তার গতকাল শুক্রবার রামপুরা বাজারে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাইচ্চাগুলার মুখে একটু মাছ-মাংস দিতি পারিনে। রোজা খোলার পর ওরা এট্টু ভালোমন্দ খাইতি চায়। কিন্তু কেমনে কী করবো? বেগুনের কেজি চায় ১০০, ডাউল ১০৫। লেবুর শরবতও খাওয়ার উপায় নাই, ৫০ টাকার নিচে লেবু নাই।’

মোমেনার মতো দশা না হলেও শওকত ইসলামের অবস্থাও খুব ভালো নয়। আয়ের পরিমাণ মোমেনার তুলনায় অনেকটাই বেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার এই কর্মকর্তার। তিনিও গতকাল বাজার করতে এসেছিলেন রামপুরা বাজারে। তবে বাজার ফর্দের সবকিছু তিনি কিনতে পারেননি। আজকের পত্রিকাকে শওকত তাঁর বাজার সদাইয়ের ফর্দ দেখিয়ে বলেন, ‘প্রথম রোজা, তাই বেগুনি চাই। কিন্তু বেগুনের যা দাম, মাত্র একটাই নিতে পেরেছি। বাচ্চারা ইফতারে চিকেন ফ্রাই খেতে চেয়েছে। কাল শুনলাম মুরগির দাম কমেছে। কিন্তু বাজারে এসে বুঝলাম, শোনা কথা আসলেই সত্যি হয় না। তাই এটাও বাদ দিলাম।’

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, রোজার প্রথম দিন এবং শুক্রবার হওয়ায় কাঁচাবাজারে ভিড় বেশি। তবে অনেকেরই মোমেনা আর শওকতের মতো অবস্থা।

আগের দিন বৃহস্পতিবার বড় কয়েকটি কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোক্তা অধিদপ্তর। সেখানে চারটি কোম্পানি কথা দেয়, তারা ২০-৩০ টাকা কমিয়ে ১৯৫ টাকায় খামার পর্যায়ে মুরগি বিক্রি করবে। কাজেই ক্রেতারা আশা করেছিলেন, এই ঘোষণায় মুরগির দাম কিছুটা কমবে। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রামপুরা, মেরাদিয়া ও কচুক্ষেত বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় তা ২০-৩০ টাকা কম।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো দাম নির্ধারণ করিনি। চারটি কোম্পানি তাদের মুরগির দাম কোম্পানি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। এর পুরোপুরি প্রভাব বাজারে পড়তে দু-এক দিন সময় লাগবে। তবে আজই সব জায়গায় মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।’

শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, মুরগির দাম কিছুটা কমলেও ডিমের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির লাল ডিম। সবজির বাজারও চোখ রাঙাচ্ছে। বেগুন, শসা, পটোল, বরবটি, করলা, ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে। লাউ প্রতিটির দাম ১০০ টাকা। গাজর, টমেটো ৬০ টাকা কেজি। পেঁপে, আলু ৩০-৪০ টাকা কেজি। ছোলার কেজি ৯০-৯৫ টাকা, মসুর ডাল দেশি ১৪০, মসুর ডাল আমদানি করা ১০৫, বেসন ১০০-১২০ টাকা। মোটা চাল (আটাশ) ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৭৫ টাকা কেজি। খোলা সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা আর বোতলজাত তেল ১৮৭ টাকা। গরুর মাংস কেজি ৭৫০ টাকা। চিড়া-মুড়ির কেজি ৮০ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত