Ajker Patrika

প্যাকেটের চিনি উধাও, খোলার দাম লাগামহীন

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৪২
প্যাকেটের চিনি উধাও, খোলার দাম লাগামহীন

দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও রাজধানীর বাজারে সেই দামে পাওয়া যাচ্ছে না খোলা চিনি। বাজার থেকে খুচরা খোলা চিনি কিনতে হলে প্রতি কেজিতে ১৩ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাকে। অন্যদিকে প্যাকেটজাত চিনির দেখাই মিলছে না দোকানে।

চিনির বাজারে এ অবস্থার কারণ হিসেবে সরবরাহ-সংকটের কথা বলছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। মিলমালিকদের কথার সঙ্গে মিল নেই পাইকারি বিক্রেতাদের।

চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রতি কেজি চিনির দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে প্রতি কেজি খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০৭ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গত তিন মাসে দুই দফায় কেজিপ্রতি ১৭ টাকা বাড়ল চিনির দাম। এরপরও রাজধানীর বাজারে কোথাও খোলা চিনি নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পশ্চিম রামপুরা বাজারের মেসার্স লামিয়া স্টোরে চিনি আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে দোকানি আরাফাত হোসেন প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা দাম হাঁকান। প্যাকেট চিনি চাইলে নেই বলে জানান তিনি।

খোলা চিনির দাম বেশি চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় তাঁরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছেন।

শুধু আরাফাত নন, বেশির ভাগ খুচরা ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, পাইকারিতে ১০৮ টাকা কেজি দরে চিনি কিনতে হচ্ছে তাঁদের। এর সঙ্গে খরচ তো রয়েছেই। ১০৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে অনেক লোকসান গুনতে হয়। সব মিলিয়ে ১১৫ টাকায় বিক্রি করলেও লাভ থাকে না। প্যাকেট চিনির সরবরাহ নেই দুই মাস ধরে। কোনো কোনো দোকানে প্যাকেট চিনি থাকলেও লাভ বেশি হওয়ায় তা কেটে খোলা বিক্রি করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ১১০-১১৫ টাকা।

চিনির একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিল থেকে প্রতি কেজি চিনি ১০৫-১০৬ টাকায় কেনা হচ্ছে। বাজারে চিনির ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে ভারত থেকে পরিশোধিত চিনি আমদানির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে মিলমালিকদের কথার মিল পাওয়া যায়নি। পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কেন নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে না, এটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। তবে মিল থেকে নির্ধারিত দামেই চিনি বিক্রি হচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠান প্রতি কেজি চিনি ১০২ টাকায় বিক্রি করছে।

চিনির দাম নির্ধারণ করলেই বাজার স্থিতিশীল হবে না, সরবরাহ-ব্যবস্থাও উন্নতি করা দরকার। এমনটাই মনে করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে চিনির চাহিদা রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে আখ থেকে তৈরি হয় ৩০ হাজার টন। অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয় ২০-২২ লাখ টন। পরিশোধনে প্রসেস লস হয় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

জানা গেছে, দেশে চিনির চাহিদা পূরণ করছে সিটি, মেঘনা, এস আলম, ইগলু ও দেশবন্ধু গ্রুপ। এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চিনির বাজার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত