Ajker Patrika

৬ মাসই জলাবদ্ধ স্কুলমাঠ

মিরাজ সিকদার, ডামুড্যা (শরীয়তপুর)
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১১: ১১
Thumbnail image

ডামুড্যা উপজেলার ৪২ নম্বর উত্তর ডামুড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ বছরের ছয় মাসই পানির নিচে থাকে। প্রতি বছরের মতো গত বর্ষাতেও বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ওঠে। সেই পানি এখনো বিদ্যালয়ের মাঠে জমে আছে।

বর্ষাকালে মাঠে থাকে এক বুক পানি। পানি থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। গত বর্ষার মৌসুমে অতিরিক্ত পানিতে ডুবে গিয়েছিল বিদ্যালয়ে আসার পথটিও। এখন পর্যন্ত যাতায়াতের পথটি চলাচলের উপযোগী হয়নি। এতে বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। বর্ষা বেশ আগেই শেষ, এখন শীত পড়তে শুরু করেছে। অথচ এখনো বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে ডুবে আছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে জমে থাকা পানিতে হাঁস সাঁতার কাটছে। একমাত্র বিশুদ্ধ পানির গভীর নলকূপটিও পানির কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের ও শিক্ষকদের অগভীর নলকূপের পানি পান করতে হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির এসএমসি সভাপতি হ‌ুমায়ূন কবির মীর বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমি সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছি। জলাবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে আমি বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমার আগে যিনি দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তাঁর চোখ এড়াল কীভাবে? যা হোক, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মারিয়ম আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমরা বাড়িতে মাঠের অভাবে খেলাধুলা করতে পারি না। তাই বিদ্যালয়ের মাঠে খেলার আশায় নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসি। কিন্তু মাঠে পানি থাকায় এখানে আমরা খেলতে পারি না। আমরা এখন কোথায় খেলব, দৌড়োব একটু বলবেন?’

প্রথম শ্রেণির ছাত্র রোহানের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়টি বন্ধ ছিল। তাই ওদের লেখাপড়ার কিছুই হয়নি। এখন বিদ্যালয় খুলছে তারপরও ভয়ে কারণে ওকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারি না। আমার বাচ্চা সাঁতার জানে না। কোনো কারণে যদি বিদ্যালয়ের মাঠের পানিতে পড়ে যায়, তাহলে ওর মৃত্যুও হতে পারে। আমি কি আমার ছেলেকে মারার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠাব! ‘

প্রধান শিক্ষক রাফেজা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় ২ বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। এখন স্কুলে আসার জন্য কোমলমতি শিশুরা ব্যাকুল হয়ে আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অভিভাবকেরা মাঠে পানি থাকায় তাদের সন্তানদের দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। ছাত্র-ছাত্রীরা চাতক পাখির মতো মাঠের দিকে তাকিয়ে থাকে, আবার কবে তাঁরা মাঠে খেলবে, দৌড়োব। মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বিনোদনসহ অন্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা।’

এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৪২ নম্বর উত্তর ডামুড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জলাবদ্ধতার সমস্যা সম্পর্কে আমি জানি। আমি নিজে বেশ কয়েক বার ওই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করতে বলেছি। কিন্তু এরপর কয়েক মাস অতিবাহিত হলেও কোনো লিখিত আবেদন পাইনি। ডামুড্যা উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত