Ajker Patrika

কৃষি বিভাগের ধান কাটা যন্ত্রে স্বস্তিতে চাষিরা

হালুয়াঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৪: ১৬
কৃষি বিভাগের ধান কাটা যন্ত্রে স্বস্তিতে চাষিরা

হালুয়াঘাটে চলতি বোর মৌসুমে শ্রমিক-সংকট, শ্রমিকের উচ্চ মূল্য ও ধানের দাম কম থাকায় ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েন প্রান্তিক কৃষকেরা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকের সোনার ফসল ঘরে তোলা এবং শ্রমিক-সংকট নিরসনে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের অধীনে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মাঝে ১৬টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন হস্তান্তর করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অন্য উপজেলা থেকেও ধান মাড়াইয়ের যন্ত্র এনে কৃষকদের ধান সংগ্রহ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা হয়েছে। এতে করে ধান কাটতে সময় এবং খরচ কম লাগায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন কৃষকেরা। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তা কাটছে না তাঁদের।

উপজেলা কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলায় ২০টি মেশিন দিয়ে ধান কাটা শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু মেশিন বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকেরা ধান কাটতে নিয়ে এসেছেন। এতে একদিকে মেশিনে ধান কাটায় কম শ্রমিক লাগায় টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। অন্যদিকে শ্রমিকের মজুরিও স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরতে শুরু করেছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ২২ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রতিকুল আবহাওয়া, শ্রমিক-সংকট, শ্রমিকের উচ্চ মূল্য ও ধানের দাম কম থাকায় ধান কাটা নিয়ে দোটানায় পড়েছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা জানান, মৌসুমের শুরুতে এক একর জমির ধান কাটতে মজুরী নিচ্ছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর দৈনিন হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকের দাম ছিল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। তবে ধানের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েন কৃষক। ঠিক সেই মুহূর্তে কৃষি বিভাগের এমন সহযোগিতায় স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের মাঝে। হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটা খরচ নেওয়া হচ্ছে প্রতি একর ছয় থেকে সাত হাজার টাকা করে।

এ বিষয়ে উপজেলার ধারা ইউনিয়নের চাদ্রশী গ্রামের কৃষক আলমগীর বলেন, এই মাড়াই মেশিনে ধান সংগ্রহ করতে সময় কম লাগে। এতে করে খরচও অনেকটা কমে আসে। তবে তিনি আরও বলেন, এসব কৃষি যন্ত্রপাতির সংখ্যা আরও বাড়ানোর পাশপাশি কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি। কেবল এই উদ্যোগের মাধ্যমেই কৃষকের দুশ্চিন্তা কমতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামের কৃষক খালেক মিয়া বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে ধান তো নষ্ট হচ্ছে। কি করমু ভাই আল্লাহ ভাগ্যে যা রাখছেন, তাই হবে।

আরেক কৃষক বলেন, ফসল পাকার শুরুতে পোকা ও শিলাবৃষ্টি পরে শ্রমিক-সংকট এখন মেশিন পেলেও বৃষ্টিতে ভিজে ধান নষ্ট হচ্ছে।

উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘কৃষকের দুঃখ-কষ্ট লাগবে আমরা দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কৃষকের ধান কাটতে নিজ উপজেলা ছাড়াও বাইরে থেকে ধান কাটার মেশিন এনে ধান কাটা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তাঁদের সময় এবং শ্রম দুটোই কমে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত