Ajker Patrika

ত্রিশালের কেচুরি বিলে দেশি মাছের উৎসব

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

কারও হাতে পলো আবার কারও হাতে বিভিন্ন ধরনের জাল। কেউ থেমে নেই, সবাই হইহুল্লোড় করে মাছ ধরছেন কিংবা সহায়তা করছেন। কেউ আবার খালি হাতেই নেমে পড়েছেন পানিতে। ছোট-বড় নানা জাতের মাছ পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রায় সবাই। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কেচুরি বিলে মাছ ধরার এ উৎসবে মিলিত হয় কয়েক হাজার শৌখিন মাছশিকারি। মঠবাড়ী ইউনিয়নের খাগাটি গ্রামের ঐতিহ্যবাহী কেচুরি বিলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জমে ওঠে মাছ ধরার এ উৎসব।

সাধারণত দেশে বর্ষা শেষে পানি নেমে গেলে মাছ ধরার এমন আয়োজন করা হতো। তবে দখল-দূষণে প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছ কমে যাওয়ায় এখন আর এসব আয়োজন তেমন চোখে পড়ে না। কয়েক বছর বিরতির পর এবার ঘোষণা দিয়েই কেচুরি বিলে মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসব উপলক্ষে মাইকিং করা হয় আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলে ব্যাপক প্রচার। ফলে খবর পেয়েই গতকাল ভোর থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন কেচুরি বিলে ভিড় করতে থাকেন মাছশিকারেরর জন্য। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।

মাছ ধরতে আসা রাইমনি গ্রামের রুবেল মিয়া বলেন, ‘এবার অতিবৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাছের আবাস থেকে কয়েক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ফলে উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রচুর মাছ পাওয়ার আশায় কয়েক হাজার মাছশিকারির আগমন ঘটেছে এ উৎসবে। আশপাশের উপজেলা ফুলবাড়িয়া, ভালুকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও লোক এসেছে।’

তবে খুব বেশি মাছ ধরতে পারেননি কলেজছাত্র রফিক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু মাছ ধরেছি, আশানুরূপ হয়নি। তবে বিলে এত মানুষকে একসঙ্গে মাছ ধরতে আগে কখনো দেখিনি। এটা ভালো লাগছে। উৎসবের আমেজ দেখা যাচ্ছে সবার মধ্যে।’

শৌখিন মাছশিকারি নয়ন মণ্ডল। পাশের উপজেলা ফুলবাড়িয়া থেকে কেচুরি বিলে মাছ ধরতে আসা এ ব্যক্তি বলেন, ‘কোথাও মাছ ধরার কথা শুনলে স্থির থাকতে পারি না। এখানে একটি বোয়াল ও সিলভার কার্প পেয়েছি। তবে মাছ বেশি না পেলেও অনেক আনন্দ উপভোগ করেছি। হাজার হাজার লোকের সঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই অন্যরকম।’

তবে এ উৎসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বিলের প্রায় ৫০টি জায়গায় গাছের গুঁড়ি, বাঁশ ও ঝোপঝাড় ফেলে মাছের আশ্রয় (মান্দা) তৈরি করেছিলেন তাঁরা। শৌখিন মাছশিকারিদের সেসব জায়গায় মাছ না ধরার অনুরোধ করেছিলেন। তবে মানুষের চাপ বেশি থাকায় কাউকেই আটকানো যায়নি। 
শাহাবুদ্দিন নামের এক মান্দা মালিক বলেন, ‘বিলটি প্রায় তিন শ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত।

এখানে মালিকানাধীন মান্দাও রয়েছে। মাছগুলোই আমাদের চলার মতো সম্পদ ছিল। কিন্তু কেউ বারণ শুনল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত