Ajker Patrika

হলুদে সেজেছে ফসলের মাঠ, খুশি কৃষক

কামাল হোসেন, কয়রা
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৪
হলুদে সেজেছে ফসলের মাঠ, খুশি কৃষক

নীল আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। দেখে মনে হয় যেন হলুদ বরণে সেজেছে প্রকৃতি। পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে আর সুভাস ছড়াচ্ছে চারদিকে। কয়রা উপজেলার ফসলের মাঠ যেন এভাবেই সেজেছে আপন মহিমায়।

উপজেলার উলা ও ৩ নম্বর কয়রা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সের বিনোদনপ্রেমীরা। কেউ সরিষা মাঠ ঘুরে দেখছেন, কেউবা আবার মোবাইল ফোনে সেলফি তুলছেন। প্রকৃতিপ্রেমী বিপাশা বিশ্বাস বলেন, এমন সৌন্দর্য কাছে থেকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। যে সুঘ্রাণটি অনুভব করছি, সেটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন এখানের কৃষকেরা। এর ভাল ফলনে খুশি তারা। বাগালী ইউনিয়নের কৃষক আলাউদ্দীন বলেন, কম পুঁজিতে সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে ৭ থেকে ৮ মণ সরিষা উৎপাদন করা যায়। আবার সরিষা ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই মুগ ডাল চাষ করেন তিনি। সরিষা আবাদের কারণে ওই জমিতে বাড়তি হাল চাষ, সার, কীটনাশক ওষুধও দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

আরেক কৃষক মজিবর রহমান বলেন, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে বারি সরিষা-১৮ জাতের ফলন ভালো হয়। কম খরচে অধিক ফলন ও ভালো দাম হওয়ায় প্রতি বছরই এ সময়ে সরিষার আবাদ করি। তিনি বলেন, উঁচু জমি সরিষা চাষের জন্য উপযুক্ত। বীজ বপনের ৮০–৮৫ দিনের মধ্যেই সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়।

৪নং কয়রা গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী ও গোপাল সরদার বলেন, কয়েক বছর আগেও তাদের জমি পরিত্যক্ত থাকত। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে সরিষা চাষ করছেন। এখানের কৃষকেরা রাত দিন পরিশ্রম করছেন। পাশাপাশি কাজ করছেন কৃষি গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরাও।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ বলেন, এ বছর কৃষককে সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকদের বারি সরিষা-১৮ জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বারি সরিষা-১৮ হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। যেখানে অন্যান্য সরিষার জাতে ইরুসিক এসিডের পরিমাণ ৪০ থেকে ৪৫%, সেখানে বারি সরিষা-১৮ জাতের তেলে এর পরিমাণ মাত্র ১.০৬%। এর ফলনও হেক্টরপ্রতি ২ থেকে ২.৫০ টন বেশি হয়।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ এমএলটি সাইট কয়রার বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান বলেন, এ বছর কয়রার কৃষকদের বারি সরিষা ১৪, ১৭ ও ১৮ জাতের বীজ ও সার বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদে তেমন পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকেরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

তিনি জানান, এ সময় সরিষা চাষ কৃষকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তাঁরা বেরো চাষ ব্যাহত না করে, স্বল্প সময়ে একটি বাড়তি ফসল উৎপাদন করতে পারে। কৃষকেরা লাভবান হন, পাশাপাশি জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত