Ajker Patrika

মাটিরাঙ্গায় ধলিয়া লেক দখল-দূষণে মৃতপ্রায়

কামরুল হাসান জনি, মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি)
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ১০: ৩৯
মাটিরাঙ্গায় ধলিয়া লেক দখল-দূষণে মৃতপ্রায়

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ধলিয়া লেক। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও জবর দখলের প্রতিযোগিতায় মরতে বসেছে লেকটি।

প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ লেকের দুই পাড়েই রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এ কারণে কারোর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

দেখা গেছে, লেকের পাড়ে থাকা হোটেল ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের ময়লা-আবর্জনার একমাত্র স্থান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ধলিয়া লেক। এ ছাড়া পাড়ের বাসাবাড়ির পয়োনিষ্কাশনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে লেকে। এই অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন ও হারুন মিয়া জানান, ধলিয়া লেকটি আগে উপজেলার সবার মাছের চাহিদার উৎপাদনক্ষেত্র ছিল। আজ ম্যালেরিয়াবাহক মশার উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পানির রং কালো হয়ে গেছে, প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এ থেকে। ঢাকার বুড়িগঙ্গায় হয়তো এত ময়লা-আবর্জনা থাকে না। লেকের পাশে যাদের ঘরবাড়ি আছে, তাদের টয়লেটের লাইন দিয়েছে লেকের মধ্যে।

মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি জসিমউদদীন ভূঁইয়া বলেন, ‘লেকের রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দেখাশোনার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের। আজ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’ উপজেলার একমাত্র লেকটি নতুনভাবে ফিরে পেতে পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

শহরের সচেতন নাগরিকদের একজন হাসানুল হক বাছরি বলেন, ‘মাটিরাঙ্গার লেকটি শহরের প্রধান জলাধার। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা ও প্রভাবশালীরা দিন দিন দখল করে নিচ্ছে। প্রশাসন ও পৌরসভা লেকটি সংরক্ষণ করে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।’

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র শামসুল হক বলেন, ‘উপজেলার প্রাচীন এই লেকটি দখল করতে করতে অনেকেই এর মধ্যিখানে চলে গেছে। অন্য এলাকা থেকে কবুলত এনে জালিয়াতি করে বন্দোবস্ত করে ফেলছে।’ প্রশাসন যদি সরকারিভাবে লেকটি উদ্ধার করে, তাহলে একটি প্রকল্পের আওতায় এনে পর্যটনে পরিণত করার আশ্বাস দেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃলা দেব বলেন, ধলিয়া লেক দখলের বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। লেকটি উদ্ধারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত আছে। নির্দিষ্টভাবে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত