Ajker Patrika

রাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাসা ৩০ শতাংশ খালি

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৯
Thumbnail image

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-কর্মকর্তা প্রায় আড়াই হাজার। এর মধ্যে আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ১৫৮ জনের। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বাসাই আবার খালি থাকে।

শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব, অতিরিক্ত ভাড়া, ফ্ল্যাটগুলোতে কক্ষের সংখ্যা কমসহ বিভিন্ন কারণে কোয়ার্টারে তাঁরা থাকতে চান না।

এদিকে বাসা খালি পড়ে থাকায় বছরে প্রায় কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়ায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য ১৫৮টি বাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি খালি রয়েছে। এসব বাসার ভাড়া শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। একই বাসার জন্য কোনো শিক্ষককে দিতে হয় ৩০ হাজার টাকা, আবার কাউকে দিতে হয় ১০-১৫ হাজার টাকা। সেই হিসাবে প্রতিবছর এই ৫০টি বাসা থেকে ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা আয় হওয়ার কথা।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একরাম উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমি একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে থাকতাম। কিন্তু এখন থাকি না। কারণ রাজশাহীতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ওয়েল ডেকোরেটেড (সুসজ্জিত) একটি বাসার ভাড়া সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে থাকতে হলে আমার ক্যাটাগরির একজন শিক্ষককে ৩০-৩২ হাজার টাকা দিতে হয়। অথচ কোয়ার্টারের বাসায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। কক্ষগুলো ছোট ছোট। বেডরুম মাত্র তিনটি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন বলেন, শিক্ষকদের বাসাগুলো নিয়মিত সংস্কার করা হয় না। কোনো কিছু নষ্ট হলে প্রকৌশল দপ্তরে কল দিলে, তারা বরাদ্দ নেই বলে জানিয়ে সংস্কার করে না। এ ছাড়া বাসাগুলোতে পর্যাপ্ত কক্ষ নেই। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো অতিরিক্ত ভাড়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই জাহান বলেন, শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসাগুলো মানসম্মত নয়। অথচ ভাড়া বেশি। এ ছাড়া বাড়িগুলো বেশ পুরোনো মডেলের। এ জন্য শিক্ষকদের সেখানে থাকতে আগ্রহ কম। কোয়ার্টারগুলোকে ক্যাটাগরিতে ভাগ না করে একটি ফিক্সড রেট অর্থাৎ ভাড়া নির্দিষ্ট করে দিলে সেগুলো ফাঁকা থাকবে না বলেও মনে করেন এই শিক্ষকনেতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার দেখভাল করেন প্রকৌশল দপ্তর। প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা একটি কমিটি করেছিলাম। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে পুরোনো বাড়ি, ভাড়া বেশি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছিল। এ সময় বাসা ভাড়া নির্দিষ্ট (ফিক্সড রেট) করার সুপারিশও করা হয়।’

আবুল কালাম আরও বলেন, ‘ফিক্সড রেটে ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, ‘বাসা ভাড়া নির্দিষ্ট করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা না দেওয়ায় ভাড়া কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাসাগুলো খালি থাকছে। শিক্ষক সমিতি নতুন করে ফাইল প্রসেস করছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত