Ajker Patrika

বোরোতে লোকসানের আশঙ্কা

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১৫: ১০
Thumbnail image

মাঠে মাঠে পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান। এমন সময় ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে চলছে ঝোড়ো বাতাস ও মৃদু বৃষ্টি। এতে ধানগাছ হেলে পড়েছে খেতে। কোনো কোনো নিচু খেতের ধান এখনো পানিতে। সেই ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চারঘাটের কৃষক।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে মণপ্রতি ধান কাটা যেত ৭-৮ কেজি ধান মজুরি দরে। এখন সেই ধান কাটাতে হচ্ছে ১০-১১ কেজি মজুরি দিয়ে। তাই এবার ধানে লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে এবার ২ হাজার ৬০০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গতবারের চেয়ে আবাদও বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে গত ৯ মে রাত থেকে শুরু হয় ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি। এতে অধিকাংশ বোরোখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ খেতের ধানগাছ হেলে পড়ে আছে। আবার কোনো কোনো খেতে এখনো পানি আছে।

উপজেলার শলুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ধান চাষে সার ও সেচের খরচ বেড়েছে। বর্গা নেওয়া জমিতে ধান চাষ করেছি। এ অবস্থায় মণে ১০ কেজি দরে মজুরি দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। এই ধানে খরচের টাকাও উঠবে না। লোকসান গুনতে হবে।’

উপজেলার নিমপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের বোরো চাষ করেছি। গত কয়েক দিনের ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে পাকা ধানগাছ জমিতে হেলে পড়ছে। মণপ্রতি ১১ কেজি দরে শ্রমিক দিয়ে কেটে নিচ্ছি।’

এদিকে শ্রমিকেরা বলছেন, ধানগাছ হেলে ও পানিতে থাকায় কাটা-মাড়াইয়ে অতিরিক্ত সময় লাগছে। এখন দেড় বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে যে সময় লাগছে, সে সময়ে তিন বিঘার ধান ঘরে তোলা সম্ভব ছিল। তাই বেশি মজুরিতে ধান কেটেও লাভ হচ্ছে না তাঁদের।

নিমপাড়া ইউনিয়নের কৈডাঙ্গা গ্রামের ধান কাটা শ্রমিক দলের সরদার খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘জমির ধান হেলে পড়ায় এবং খেতে পানি জমে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। তাই মণপ্রতি ১০ কেজি দরে ধান কেটেও লাভ হচ্ছে না। তবুও কৃষকের লোকসানের কথা চিন্তা করে ধান কাটতে হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার বলেন, এ পর্যন্ত কী পরিমাণ আগাম জাতের বোরো ধান কাটা ও মাড়াই হয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই তা নির্ধারণ করা হবে। তবে হেলে পড়ায় ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও ধান ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারলে কৃষকেরা লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত