Ajker Patrika

পাকা সড়ক এখন কাদায় ভরা

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২৫
পাকা সড়ক এখন কাদায় ভরা

সংস্কারের অভাবে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর থেকে সুরমা ইউনিয়ন হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়কটি। এক সময়ের পিচঢালা সড়ক এখন কাদায় ভরা।

সড়কটি দিয়ে উপজেলার লক্ষ্মীপুর, সুরমা ও বোগলা ইউনিয়নের ৮০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে থাকে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোনো বিকল্প পথ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়ক দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। পথচারীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ালেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, যানবাহন চলাচল দূরের কথা, সড়কটি দিয়ে এখন হেঁটে চলাচল পর্যন্ত করা যায় না। কাদায় ভরা সড়কে যে কোনো সময় পা পিছলে পড়ে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিদিনই মালামাল পরিবহনের গাড়ি এই সড়কে আটকা পড়ছে। প্রায়ই সিএনজি, মোটরসাইকেল উল্টে পড়ে আহত হচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা। অসুস্থ মানুষ, গর্ভবতী ও বয়োবৃদ্ধরা এই সড়কের নাম শুনলেই ভয় পান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দোয়ারাবাজার থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়কটি যেন মরণ ফাঁদ। সড়কের শরীফপুর, শান্তিপুর-খৈয়াজুরি, গিরিশনগর, মহব্বতপুর, রবার ড্যাম, নোয়াপাড়া, জিরাগাঁও, লক্ষ্মীপুর এলাকা পর্যন্ত পুরোটাই গর্ত-খানাখন্দ ও কাদায় ভরা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় বের হয়ে আছে রড, ইট-পাথর ও সিমেন্টে। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় প্রায় হাঁটু পরিমাণ কাঁদা। ভাঙা সড়কে কাদা মাড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করতে দেখা গেছে।

দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দীন বলেন, ‘ভঙ্গুর রাস্তার কারণে আমরা সময়মতো কলেজে যেতে পারছি না। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।’

উপজেলা সিএনজি মালিক সমিতির সহসভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এটা সড়ক নয়, অভিশাপ। জনপ্রতিনিধি বলেন আর প্রশাসন বলেন, কেউ আমাদের এই দুর্ভোগ দূর করতে আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের উদ্যোগ নেননি। দোয়ারাবাজার থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত পুরো সড়কটাই গাড়ি চলাচল অনুপযোগী। আমরা বিপদে পড়ে পেটের দায়ে এই সড়কে সিএনজি চালাই।’

টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক বলেন, ‘টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড, বাগানবাড়ি বর্ডার হাটের মতো অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কোনো কাজেই আসবে না যদি দোয়ারাবাজার থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়কটি মেরামত না করা হয়। সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।’

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এই সড়কটি দ্রুত মেরামত করার জন্য উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বারবার কথা বলেছি। এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করেছি। তিন ইউনিয়নের মানুষ নিয়ে সড়কে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে উপজেলা পরিষদের বরাদ্দে সাময়িক চলাচলের সুবিধার্থে সড়কের গর্ত ও খানাখন্দে সিমেন্ট ও ইট, পাথর ফেলেছিলাম।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাশেদুর রহমান বলেন, ‘জানতে পেরেছি সড়কটি একটি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমি সম্প্রতি এখানে যোগদান করেছি। অসুস্থ হওয়ায় এখন বাসায় আছি। তাই অফিসের কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত