Ajker Patrika

মেলান্দহে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের হাতে

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১২: ২১
মেলান্দহে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের হাতে

জামালপুরের মেলান্দহ বাজার রেলস্টেশনে দৌরাত্ম্য বেড়েছে টিকিট কালোবাজারি চক্রের। এ স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা আন্তনগর ট্রেন দুটির জন্য ২৩০টি আসন বরাদ্দ থাকলেও কাউন্টারে টিকিট চোখের পলকেই শেষ হয়ে যায়। পরে যাত্রীদের বেশি টাকা দিয়ে কালোবাজারিদের থেকে টিকিট কিনতে হয়।

কালোবাজারিদের সঙ্গে স্টেশনের কিছু কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তবে মেলান্দহ বাজার রেলওয়ে স্টেশন কর্মকর্তা বলেছেন, কাউন্টার থেকে কালোবাজারিদের হাতে কোনো টিকিট যাওয়ার সুযোগ নেই। টিকিট ছাড়ার সময় লাইনে এসে যে দাঁড়াবে, সে-ই টিকিট পাবে।

মেলান্দহ রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী প্রতিদিন দুটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। তিস্তা এক্সপ্রেসে মেলান্দহ উপজেলার যাত্রীদের জন্য কাউন্টারে ৫৫টি এবং অনলাইনে ৫৫টি, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের কাউন্টারে ৬০ ও অনলাইনে ৬০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও দুটি ঢাকাগামী কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। কমিউটার ট্রেনের টিকিট নির্ধারিত নয়। স্টেশনে পৌঁছার ১ ঘণ্টা আগে এ ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়।

মেলান্দহ বাজার রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারে কোনো লোকজন নেই। কাউন্টার বন্ধ। টিকিট নেওয়ার জন্য কাউন্টারের আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন যাত্রীরা। কাউন্টারের পাশেই কালোবাজারি একদল চক্র প্রকাশ্যে অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করছে। স্টেশনের বিশ্রাম রুমের পাশেই একটি ভ্যানগাড়ির ওপর বসে থেকে তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রি করছে এক লোক। তারা স্টেশন কর্মকর্তাদের সামনেই বেশি দামে টিকিট বিক্রি করছিল।

তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রার ৫ দিন আগে তিস্তা ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য অনলাইনে ঢুকেছিলাম। গিয়ে দেখি কোনো টিকিট নেই। এক মিনিটেই অনলাইনে সব টিকিট নিখোঁজ। ওই দিন বিকেলে মেলান্দহ স্টেশনে টিকিট কাটতে আসলাম। পরে জানতে পারলাম সকাল ৯টার আগেই কাউন্টারের সব টিকিট শেষ। পরে বাইরে থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে একটি টিকিট নিয়েছি।’

কামরুল হাসান নামের যাত্রী বলেন, ‘আমি বেশির ভাগ সময় ট্রেনে যাতায়াত করি। একদিনও কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে পারিনি। আজ ২০৫ টাকার টিকিট কিনতে হয়েছে ৫০০ টাকায়। টিকিট কালোবাজারি বন্ধে প্রশাসন কখনো অভিযানও পরিচালনা করে না। তাই টিকিট কালোবাজারি চক্রের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।’

মেলান্দহ বাজার রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা (স্টেশন মাস্টার) মো. মাহমুদুল হক বলেন, ‘কাউন্টার থেকে টিকিট কালোবাজারিদের হাতে কখনই যাওয়ার সুযোগ নেই। তাঁরা কীভাবে টিকিট পান, আমরা নিজেরাও জানি না। অনলাইনের টিকিট যে কেউ কাটতে পারে। তাঁরা স্টেশনের আশপাশে ঘোরাঘুরি করে টিকিট বিক্রি করেন।’

এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে আমরা অভিযান পরিচালনা করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত