Ajker Patrika

স্বেচ্ছাসেবী হাসপাতালের রোগী নিচ্ছেন ক্লিনিকে

শাহীন আক্তার পলাশ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) 
স্বেচ্ছাসেবী হাসপাতালের রোগী নিচ্ছেন ক্লিনিকে

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘স্বেচ্ছাসেবী’ ও ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীদের দৌরাত্ম্যে সেবাপ্রার্থীরা অতিষ্ঠ। দিনে দিনে রোগী হয়রানি বেড়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

জানা গেছে, এক বছরের জন্য ৮ জন স্বেচ্ছাসেবী এবং ১১ জন আউটসোর্সিং কর্মীকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংসদ সদস্যের সুপারিশে ২০২১ সালের জুলাইয়ে নিয়োগ পান তাঁরা। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিনিময়ে তাঁরা আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন।

গত মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরেজমিন ঘুরে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় দেখা গেছে, হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সামনের প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী নিয়ে যাচ্ছেন মাহফুজা ও খালেদা নামের দুই স্বেচ্ছাসেবী। বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কক্ষ থেকে রোগী বের হওয়ার পর ফুসলিয়ে তাঁদের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের রেণুকা বেগম বলেন, ‘আমি অসুস্থ। ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছে। বিপুল নামে আউটসোর্সিং কর্মী হাসপাতালের একজন লোক আমাকে ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে আমার কাছ থেকে পরীক্ষার নামে দুই হাজার টাকা নিল। পরে জানতে পারলাম, এসব পরীক্ষা হাসপাতালেই হয়।’

উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা করিম উদ্দিন বলেন, ‘মাসখানেক আগে অস্ত্রোপচার করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ওখানে মাহফুজা নামের এক মহিলা বলল, ডাক্তার নেই। পরে আমাকে ক্লিনিকে নিয়ে গেল। তার কথামতো সেখানে অস্ত্রোপচার করে আমার অনেক খরচ হয়ে গেল। দালালের অত্যাচারে আমরা সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ।’

নুরজাহান প্রাইভেট ক্লিনিকের মালিক শওকত হোসেন বলেন, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সেবা নিতে আসা গরিব ও অসহায় রোগীরা।

অপারেশন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নাম করে নিয়ে যায় তাদের পছন্দমতো ক্লিনিকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এসব কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবী ও আউটসোর্সিংয়ের কর্মীরা।

আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত নই। তবে স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে কেউ কেউ এসব কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।’

অপারেশন কক্ষের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী ওয়ার্ডবয় বিপুল বলেন, ‘আমি জোর করে কোনো রোগীকে ক্লিনিকে নিই না। রোগীদের প্রয়োজনেই আমি কিছু রোগী নিয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যাই। হাসপাতাল থেকে আমাদের কোনো বেতন দেয় না। তাই কিছু রোগী বাইরে নিয়ে যাই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদ আল মামুন বলেন, ‘এমপি সাহেবের সুপারিশে এসব লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের কেউ যদি রোগী নিয়ে এমন প্রতারণা করে থাকে, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না, বিস্ফোরক তামিম

কাগজে-কলমে মেয়র হওয়ায় দায়িত্ব পালন করলাম: জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে ইশরাক

এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণায় বিএনপি ও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত