Ajker Patrika

আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কেন

সম্পাদকীয়
আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কেন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার নাম সংবাদপত্রের পাঠকদের অজানা নয়। বছর দুয়েক আগে বসুরহাট গণমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল মির্জা কাদের নামের আওয়ামী লীগের এক স্থানীয় পর্যায়ের নেতার বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য ও আচরণের কারণে। মির্জা কাদের ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি ওবায়দুল কাদেরের ভাই হওয়ার কারণেই সম্ভবত অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন। তিনি টানা কয়েক দিন ছিলেন টক অব দ্য কান্ট্রি। ওবায়দুল কাদেরের ভাই হওয়ায় মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক বা আইনি কোনো ব্যবস্থাই তখন নেওয়া হয়নি।

কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের নাম আবার খবরের কাগজে এসেছে এবং এবারও ঘটনার সঙ্গে নাম এসেছে ওবায়দুল কাদেরের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের। আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, বসুরহাট পৌরসভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) এক উপসহকারী প্রকৌশলীকে মারধর ও মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। আহত ও লাঞ্ছিত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন এবং স্থানীয় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর ওপর চড়াও হয়েছেন। প্রকৌশলী সাইফুলের অপরাধ কী? শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘ওই প্রকৌশলী একজন ঘুষখোর। বসুরহাট এলাকা থেকে গত তিন বছরে তিনি ৩ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন। পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি খুঁটি স্থাপনে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে উত্তম-মধ্যম দিয়ে আমার কাছে নিয়ে আসে। এ সময় কে বা কারা তাঁর চুল কেটে দিয়েছে, তা আমি জানি না।’

প্রকৌশলীর বক্তব্য ভিন্ন। তিনি বলেছেন, অনুমোদনহীন খুঁটি স্থাপনে বাধা দেওয়ায় তাঁকে মারপিট করার পর সমাধানের কথা বলে শাহাদাত হোসেনের কাছে নিয়ে গিয়ে সেখানে একটি ঘরে আটকে রেখে আবারও বেদম মারপিটের পর মাথাও ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। একজন সহকারী প্রকৌশলী ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তিনি প্রতিকার চেয়ে বসুরহাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।

ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ফেনী তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্তের মাধ্যমে আসল ঘটনা বের করুক—এটা আমরা চাই। একই সঙ্গে এ প্রশ্নটিও সামনে আসে যে শাহাদাত হোসেন কি অপরাধ দূর করার আইনি অধিকারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি? প্রকাশিত খবর থেকে বোঝা যাচ্ছে, তিনি ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের একজন ‘কেউকেটা’ বই আর কিছু নন। তিনি আইনের লোক নন।

প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ যদি সত্যিও হয়, তাহলে কি তাঁর 
গায়ে হাত তোলা, মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া তথা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়েছে? ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হওয়ার কোনো নির্দেশনা কি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত