Ajker Patrika

কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নাশতার টাকা কার পেটে

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৬: ১২
কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নাশতার টাকা কার পেটে

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১১টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের টিফিন ও স্টেশনারি মালামাল ক্রয়ে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানগুলোর তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ক্লাস অনিয়মিত এবং নির্ধারিত সময় ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্লাবের সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভাসহ গৌরীপুর উপজেলায় ১১টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রতি ক্লাবে ৩৫ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও আছে ৩০ জন। টিফিনের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই হিসেবে উপজেলায় টিফিনের মোট বরাদ্দ পায় ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী। এ বাবদ সরকারি বরাদ্দ আসে প্রতি মাসে ৯২ হাজার ৪০০ টাকা। যার সিংহভাগই চলে যায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পকেটে। গত ছয় মাসে নাশতা, স্টেশনারি ও অন্যান্য সরঞ্জাম বাবদ বরাদ্দের কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, গত জানুয়ারি মাসে প্রতিটি ক্লাবে স্টেশনারি মালামাল ক্রয়ের জন্য ৩ হাজার টাকা করে বরাদ্দ আসে, যার কোনো পণ্যই কেনা হয়নি আজও। সপ্তাহে দুই দিনের পরিবর্তে পাঠদান চলছে একদিন। প্রতিজন শিক্ষার্থীর টিফিনের জন্য সপ্তাহে ৬০ টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ১০-১৫ টাকার নাশতা। তবে জুলাই মাস থেকে টিফিনের বরাদ্দ কমিয়ে দৈনিক ১৫ টাকা করা হয়েছে বলে জানা যায়।

শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাবের সদস্যদের জন্য আসা মার্শাল আর্টের পোশাক মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। অন্যদিকে ক্যারাম বোর্ড ও অন্যান্য খেলার সামগ্রী এখনো প্যাকেটবন্দী হয়ে আছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে।

জানা যায়, ২০১৯ সালে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের যাত্রা শুরু হলেও করোনার লকডাউনের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়। যা মাঠ পর্যায়ে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহে দুই দিনের পরিবর্তে পাঠদান চলছে এক দিন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি পাওয়া গেছে গড়ে ১০ থেকে ১৫ জন। নাশতা দেওয়া হয় ৫ থেকে ১০ টাকা মূল্যের বিস্কুট বা কেকের একটি প্যাকেট। কখনো কখনো সঙ্গে একটি কলাও থাকে। তিন ঘণ্টার পরিবর্তে পাঠদান চলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, এপ্রিল ও জুলাই মাসে তারা কোনো টিফিন পায়নি। মে ও জুন মাসে পেয়েছে ২ দিন করে। এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত শুধু বেকারির সস্তা বিস্কুট দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোর-কিশোরী ক্লাবের একাধিক শিক্ষক জানান, বরাদ্দের ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানেন না। গৌরীপুর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সপ্তাহে এক দিন ক্লাস নিতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গৌরীপুর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ বলেন, সব উপজেলায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব এভাবেই চলছে। রমজান মাসে বরাদ্দ দেরিতে আসায় নাশতা দেওয়ার সুযোগ হয়নি। জুলাই মাসেও কোনো বরাদ্দ আসেনি।

ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, পদাধিকার বলে এ প্রকল্পের সভাপতি হলেও এসব অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে আমি সম্প্রতি শুনেছি। তদন্ত করে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত