Ajker Patrika

সিত্রাংয়ে হাজীগঞ্জের ১২ ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনো দিশেহারা। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে বসতঘর, দোকানপাট, গাছপালা ও ফসলের ক্ষতিসহ প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন স্থানীয় পর্যায়ে কিছু সহযোগিতা পেলেও উপজেলা পর্যায়ে এখনো সহযোগিতা পায়নি বলে জানা যায়।

গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাত ও তীব্র বাতাসে হাজীগঞ্জে বসতঘর, গাছপালা, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও শীতকালীন আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে দুই দিনের বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসে উপজেলার প্রায় সব এলাকায় গাছপালার ক্ষতি হয়। এতে কোথাও গাছের ডাল ভেঙে পড়ে, কোথাও গাছ উপড়ে যায়। আর গাছপালা উপড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের (কেব্‌ল) অনেক ক্ষতি হয়।

আবার বেশ কয়েকটি স্থানে বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়ে। যার ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে কয়েক দিন। আর বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের চার্জ, নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বা উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন এলাকা বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পৌঁছাতে দেরি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমূড়া গ্রামের মো. মনিরুজ্জামান জানান, তাঁদের বাড়িতে প্রায় ৩০-৩৫টি বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে। এসব গাছে কয়েক শ পাখির বসবাস ছিল। তাঁদের যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি পাখিরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বক পাখির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে ছয় একর সম্পত্তি। যেখানে অনেক গাছপালা রয়েছে। এসব গাছে কয়েক শ পাখির বসবাস। ঝড়ে এবং গাছ উপড়ে পড়ে প্রায় সব পাখির বাসা ভেঙে পড়ে। এতে অন্তত শতাধিক পাখি আহত হয় এবং পাখির ছানা নিচে পড়ে। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন আহত বক ও ছানা ধরে নিয়ে যায়।’
কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, ‘আমরা স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে কয়েকজনকে সামান্য সহযোগিতা করেছি, তবে উপজেলা পর্যায়ে এখনো কোনো সহযোগিতা আসেনি।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের সরেজমিনে তদন্তে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রায় সব জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়েছে। মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব তথ্য ইতিমধ্যে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত