Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে নৌকার ‘দাপুটে’ প্রার্থীরা কোণঠাসা স্বতন্ত্রের কাছে

আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ২২
লক্ষ্মীপুরে নৌকার ‘দাপুটে’ প্রার্থীরা কোণঠাসা স্বতন্ত্রের কাছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকি তিনটিতে নৌকার দাপুটে প্রার্থী রয়েছেন। এই প্রার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কারণে। নৌকার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দুজনই দলীয় হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। 

এরই মধ্যে দলীয় নেতা-কর্মীরা নৌকার পক্ষে না থাকলে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ও দলের নেতা এম এ সাত্তারের পক্ষে কাজ করায় মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমানকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

লক্ষ্মীপুর-১, (রামগঞ্জ), লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর), লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) ও লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) জেলায় এই চারটি সংসদীয় আসন। চারটি আসনে ডা. আনোয়ার হোসেন খান, নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, গোলাম ফারুক পিংকু ও ফরিদুন্নাহার লাইলীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে ১৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু) থেকে মোশারেফ হোসেনকে জোটগতভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। 

এদিকে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. আনোয়ার হোসেন খানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান পবন মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। 

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কাজী সেলিনা ইসলাম। 

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ছেন রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার। 

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জাসদের মোশারেফ হোসেন। মোশারেফ হোসেন ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পর আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করে ঢাকায় চলে যান। এরপর আর এলাকায় তেমন দেখা যায়নি তাঁকে। এই আসনে হাসানুল হক ইনুর জাসদের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মোশারেফের সঙ্গে স্বতন্ত্র হয়ে মাঠে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন ও আওয়ামী লীগ নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীম। 

লক্ষ্মীপুরের চারটি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ লাখ ৩ হাজার ৫৭১। এর মধ্যে পুরুষ ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৮৮ ও নারী ৭ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৩ জন। এই সংসদীয় আসনগুলোতে মোট ৩০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

নৌকার প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, ‘দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রচারকাজ করছি। মাঠে যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন, তিনি নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কোনো নেতা-কর্মী নেই। ভোটারদের কেন্দ্রে নেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’ 

স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তার বলেন, ‘আমি দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে রয়েছি। যেখানে দলের শীষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছি।’ 

প্রার্থী মোশারেফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জোটগতভাবে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে এই আসনে পাঠানো হয়েছে। তবে দলের বড় একটি অংশ নৌকার সঙ্গে মুনাফেকি করছে। তারপরও কোনো সমস্যা নেই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত