Ajker Patrika

গর্ভেই মারা গেছে ১৫ শতাংশ শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ২৫
গর্ভেই মারা গেছে  ১৫ শতাংশ শিশু

কোভিড-১৯ রোগীর বড় অংশই সুস্থ হয়ে উঠলেও আক্রান্তের শরীরে বিরূপ প্রভাব রেখে যাচ্ছে করোনাভাইরাস। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় যেসব নারী করোনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে গর্ভাবস্থায় করোনায় আক্রান্ত নারীদের ৪৬ শতাংশ বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার। তাঁদের ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশই নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করেছেন। একই সঙ্গে গর্ভেই মৃত্যু হয়েছে ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ শিশুর। এ ছাড়া জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ করেছেন ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নারী।

গর্ভাবস্থায় করোনার প্রভাব সম্পর্কে জানতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) এই গবেষণা পরিচালনা করেছে। বিষয়টি নিয়ে দেশে এটাই প্রথম কোনো জাতীয় জরিপ। এতে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত মায়ের গর্ভজনিত জটিলতার হার করোনামুক্ত নারীর চেয়ে ২৮ গুণ বেশি।

জরিপের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৮৯০ জন গর্ভবতী নারীর নমুনা পরীক্ষা করে নিপসম। জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের ২১৫ জন ছিলেন করোনায় আক্রান্ত। আর করোনামুক্ত ছিলেন ৬৭৫ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সেন্টার ও বেসরকারি গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে এ গবেষণা চালানো হয়। জরিপে অংশ নেওয়াদের গড় বয়স ২৬ দশমিক ৩ বছর। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশের বয়স ২৪ থেকে ৩৫-এর মধ্যে।

গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত নিপসম অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘দেশে গর্ভবতী নারী এবং নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ।

গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত গর্ভবতীদের ৮৩ শতাংশেরই সিজার করতে হয়েছে। যেখানে করোনায় আক্রান্ত হননি এমন গর্ভবতীদের মধ্যে সিজারের প্রয়োজন পড়েছে ৬৮ শতাংশের। সব মিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত না হওয়া গর্ভবতীদের তুলনায় গর্ভকালীন ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি ঝুঁকিতে ছিলেন করোনায় আক্রান্তরা।

ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ জানান, করোনায় আক্রান্ত গর্ভবতীদের মধ্যে ৯১ দশমিক ২ শতাংশের লক্ষণ ছিল। বাকি ৮ দশমিক ৪ শতাংশের মধ্যে কোনো লক্ষণ ছিল না। আক্রান্তদের মধ্যে ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশের জ্বর, ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশের কাশি, ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশের শ্বাসকষ্ট, ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ খাবারের স্বাদ পেতেন না এবং ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ গন্ধ পেতেন না। এ ছাড়া ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ গর্ভবতীর মধ্যে মাথাব্যথার লক্ষণ ছিল।

অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে আমরা সংকটাপন্ন এ সময়ে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছি। জটিলতা এড়াতে গর্ভবতী মায়েদের দ্রুত টিকা নিতে হবে। এখন ওমিক্রন এসেছে। আমরা অনুরোধ করব, একেবারে প্রয়োজন না হলে এ মুহূর্তে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকাই উত্তম।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লজ্জায় ধর্ষণের শিকার মায়ের আত্মহত্যা: ৮ বছরের মেয়েটি যাবে কোথায়

বলিদান ও শয়তান পূজার বুদ্ধি দিল চ্যাটজিপিটি

সঞ্জয়ের ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে পারিবারিক উত্তেজনা তুঙ্গে

বাংলাদেশ ব্যাংকে পোশাক নির্দেশনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি ৫৪ বিশিষ্ট নাগরিকের

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত