Ajker Patrika

কলারোয়ায় দেড়শ বছরের মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে

ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ০১
কলারোয়ায় দেড়শ বছরের মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে

কলারোয়া উপজেলা সদরের পালপাড়ার দেড়শ বছরের মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্ত প্রায়। তবে এখনো কেউ কেউ টালির ছাউনি ঘরে মাটির জিনিসপত্র বানিয়ে পূর্বপুরুষের পেশাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কারিগররা সরকারি সহায়তা কামনা করছেন।

পূর্বে যেখানে ২৮ টির মত মৃৎশিল্প কারখানা ছিল সেখানে এখন মাত্র সাতটি কারখানা ৷ সেগুলোতে কোনো রকম মৌসুমী ভাড় ও হোটেলের দইয়ের মালশাসহ কিছু জিনিসপত্র বানানোর কাজ হচ্ছে ৷ মাটির হাড়ি, কলস, গ্লাস, ধান চাল সংগ্রহের ছোট বড় হাড়া-জালা, ভাত খাওয়ার সানুক, গোখাদ্য দেওয়ার নান্দা, স্যানিটেশন রিং স্লাপ ইত্যাদি এখন বিলুপ্তির পথে।

এ ব্যাপারে উত্তর মুরারীকাটি গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ পালের স্ত্রী অঞ্জলি পাল বলেন, ২০ বছর আগেও এক সাথে যারা মাটির কারখানায় কাজ করেছেন তাঁদের অধিকাংশই এখন বেঁচে নেই। তাঁদের সাথে যেন কারখানাগুলোও বিলীন হয়ে গেছে। এক সময় রসের মৌসুমে মাটির ভাড় বিক্রি করে সংসার চালিয়ে টাকা জমালেও এখন আর আগের মতো কেনা-বেচা নেই। এজন্য তিনি প্লাস্টিকের কদর বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন। অথচ একসময় সমাজে মাটির জিনিসপত্রের রাজত্ব ছিল।

অঞ্জলি পাল আক্ষেপ করে বলেন, হাতের এ কাজটি অনেক কষ্টসাধ্য। আমি মারা গেলে এই কাজ আমার পরিবারের আর কেউ করতে পারবে না। এজন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মৃত ধীরেন্দ্র পালের ছেলে কৃষ্ণ পাল বলেন, একসময় এ রসের মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ পিছ ভাড় বিক্রি হতো কিন্তু এখন দিনে ১০ পিস বিক্রি করা কঠিন। আগে দেড় টাকা দিয়ে গরুর গাড়ির ১ গাড়ি মাটি কিনে ৬০-৭০টি তৈরি করে ২ টাকা দরে বিক্রি হতো। কিন্তু এখন একদিকে মাটি ও মজুরির দাম বেড়েছে, অন্যদিকে প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের সাথে সাথে মৃৎপাত্রের চাহিদা ব্যাপক কমেছে।

তিনি বলেন, দাদুর হাত ধরে বাকপ্রতিবন্ধী বাবা মৃৎশিল্পের কাজ শিখেছিলেন। তবে এ কাজে লাভ না হওয়ায় তাঁরা বিভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। এক সময় কলারোয়া থেকে মৃৎশিল্পীদের গড়া মাটির জিনিসপত্র জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতে রপ্তানি হতো ৷ কিন্তু এখন টালির কারখানা ও মৃৎশিল্প প্রয় বিলুপ্ত।

এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, সৃষ্টির আদি থেকেই প্রতিটি পরিবার ও সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় মৃৎশিল্পের গুরুত্ব ও অবদান অনেক ৷ বড় বড় নামিদামী ভিআইপি রেস্টুরেন্টে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের গুরুত্ব রয়েছে ৷ এ সময় তিনি উপজেলার মৃৎশিল্পীদের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতিসংঘে চিঠি লিখলেন মোগল সম্রাটের বংশধর, সুরক্ষা চাইলেন আওরঙ্গজেবের সমাধির

সেভেন সিস্টার্সে বিনিয়োগ টানতে বিশেষ সম্মেলন আয়োজন করছে ভারত

কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে

আফ্রিকা থেকে পিঁপড়া যাচ্ছে ইউরোপে, কেনিয়ার বিমানবন্দরে জব্দ কয়েক লাখ

কফিশপে মারধরের শিকার সেই তরুণীর খোঁজ মিলেছে, থানায় জিজ্ঞাসাবাদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত