পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আগামী সোমবার উৎসবে মেতে উঠবে সারা দেশ। দিনটি ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় বসে মেলা। সেখানে অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে বিক্রি হয় মাটির তৈরি নানা জিনিস। এই মেলা ঘিরে আয়-রোজগার বাড়ানোর নতুন স্বপ্ন দেখছেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মৃৎশিল্পীরা।
পটুয়াখালীর বাউফলে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। বিশেষ করে বগা, কনকদিয়া, বাউফল এলাকায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ শতাধিক পরিবারের সদস্যরা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। এসব এলাকায় কারিগরদের হাতের ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে হাঁড়ি-পাতিল, প্রদীপ, কলস, মুখোশ, শোপিস, ফুলদানি,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন স্থপতি ময়নুল আবেদিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
নিরীক্ষামূলক মৃৎশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছরের ‘মহাত্মা গান্ধী গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননা পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ। সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় মহাবোধি সোসাইটি মিলনায়তনে এই সম্মাননা দেওয়ার জন্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়
সাতক্ষীরার তালায় কপোতাক্ষ নদীর তীরের কুমারপাড়ায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের দেওয়া হচ্ছে মাটির পণ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্র।
প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না মৃৎশিল্প। এ শিল্পে জড়িত অনেকে পেশা বদল করে চলে যাচ্ছেন অন্য কাজে। আর জড়িতরা দিন পার করছেন কষ্টে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বানানো হচ্ছে পদ্মা সেতুর টেরাকোটা। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিথিদের দেওয়া হবে মাটির তৈরি এই টেরাকোট। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যাদেশ পাওয়ার পর ব্যস্ত সময় পার করছেন শরীয়তপুরের কার্তিকপুরের মৃৎশিল্পীরা।
বাংলা নববর্ষ ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। কাল বৃহস্পতিবার বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। নববর্ষের উৎসব ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসে বর্ষবরণ মেলা।
আর মাত্র তিন দিন পরই পয়লা বৈশাখ। করোনার ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় নীলফামারীর প্রায় ৪০০ মৃৎশিল্পীর পরিবার এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এসব পরিবারের সদস্যরা হাতের কারুকার্যে কাদামাটি দিয়ে তৈরি করছেন বাহারি পণ্য।
প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পে। বদলে গেছে পালপাড়ার কুমারদের জীবন-জীবিকা। এখানকার মৃৎশিল্পীদের আর প্রচলিত পদ্ধতিতে চাক ঘোরাতে হয় না।
বরুড়া পৌরসভার পুরান কাদবা গ্রামের ‘কুমার গর্ত’ বর্তমানে ডোবায় পরিণত হয়েছে। এ গর্তের মাটি আশপাশের ফসলি জমির মাটি থেকে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ছিল। এই মাটিই বরুড়ার কুমারদের একটি অংশ পাত্র তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হতো। এর চাহিদা ছিল ব্যাপক। কালের আবর্তে জৌলুশ হারিয়েছে মাটির তৈরি পাত্র। সেসঙ্
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় একসময় মৃৎশিল্পের অনেক কদর ছিল। প্রযুক্তির ছোঁয়া এবং নানা প্রতিকূলতায় ঐতিহ্যবাহী চলিশিয়া পালবাড়ির মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তবু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা এ পেশার সঙ্গে জড়িত কুমারদের।
মৃৎশিল্পের জন্য একসময় যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুনাম ছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে অভয়নগরের ঐতিহ্যবাহী চলিশিয়া গ্রামের পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতে না হতেই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প। তাই বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার বা পালরা এ পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত।
শরীয়তপুরের মৃৎশিল্পের সুখ্যাতি দীর্ঘ দিনের। যুগ যুগ ধরে এ জেলার পাল বংশের মানুষ গৃহস্থালির বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র তৈরি করে আসছে। আদি এই পেশায় এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন পণ্য, যা শুধু দেশেই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায়।
সিরামিকস, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, প্লাস্টিক পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে মৃৎশিল্প। তবে গাজীপুরের কাপাসিয়ার কড়িহাতা ইউনিয়নের কুমারপাড়ায় মৃৎশিল্প টিকিয়ে রেখেছেন নারীরা। এ কাজে পুরুষদের অনীহা ও অন্য পেশায় চলে যাওয়ায় হাল ধরেছেন নারীরাই।
কলারোয়া উপজেলা সদরের পালপাড়ার দেড়শ বছরের মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্ত প্রায়। তবে এখনো কেউ কেউ টালির ছাউনি ঘরে মাটির জিনিসপত্র বানিয়ে পূর্বপুরুষের পেশাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কারিগররা সরকারি সহায়তা কামনা করছেন।
প্রয়োজনীয় চাহিদা না থাকায় কাউনিয়ায় বিলীনের পথে চলে গেছে মৃৎশিল্প। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবসহ নানা সংকটের মধ্যেও এখনো কেউ কেউ এই পেশা ধরে রেখেছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মাটির কাজ ছেড়ে বালু-সিমেন্ট দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন।