Ajker Patrika

বৈশাখী মেলা ঘিরে মৃৎশিল্পীদের চোখে নতুন স্বপ্ন

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি  
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ২৫
বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে চলছে মাটির জিনিসপত্র তৈরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে চলছে মাটির জিনিসপত্র তৈরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আগামী সোমবার উৎসবে মেতে উঠবে সারা দেশ। দিনটি ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় বসে মেলা। সেখানে অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে বিক্রি হয় মাটির তৈরি নানা জিনিস। এই মেলা ঘিরে আয়-রোজগার বাড়ানোর নতুন স্বপ্ন দেখছেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মৃৎশিল্পীরা।

মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারি ও রমজান মাসের কারণে গত কয়েক বছর সেভাবে বৈশাখী মেলা না হওয়ায় থমকে গিয়েছিল মৃৎশিল্পীদের কর্মযজ্ঞ। এবার মেলা ঘিরে ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন স্বপ্ন দেখছে উপজেলার বয়রাগাদী, রশুনিয়া, বাসাইল, রাজানগর ও শেখরনগর ইউনিয়নের মৃৎশিল্পী পরিবারগুলো।

আজ শনিবার বাসাইল ইউনিয়নের পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কুমারদের সুনিপুণ হাতে তৈরি হয়েছে মাটির হাঁড়ি-পাতিলসহ খেলনাসামগ্রী। উপজেলার যেখানেই মেলা বসে, সেখানেই তাঁরা মাটির এসব জিনিস বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

ভূইরা গ্রামের মৃৎশিল্পী ননি পাল বলেন, ‘এখন আগের মতো মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি হয় না। তারপরও বৈশাখী মেলা সামনে রেখে হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করেছি। আশা করছি, এবার পয়লা বৈশাখে ভালো বিক্রি করতে পারব।’

আরেক মৃৎশিল্পী কালিপদ পাল বলেন, ‘৪০ বছর ধরে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমার বাপ-দাদার পেশাও ছিল এটা। এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর কমেছে। এ ছাড়া আগের মতো বৈশাখী মেলাও বসে না। তা ছাড়া প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়েছে। তাই বেকার হয়ে পড়ছেন মৃৎশিল্পীরা। অনেকে পেশা পরিবর্তন করে স্বর্ণের কাজ, কেউ বিদেশে, কেউবা কামারের কাজ করছেন। আমরা কোনোরকমে বেঁচে আছি।’

বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে চলছে মাটির জিনিসপত্র তৈরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে চলছে মাটির জিনিসপত্র তৈরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেখরনগর ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ পাল জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৈশাখী মেলার দোকানিদের কাছে সরবরাহ করার লক্ষ্যে প্রতিদিনই পাইকারেরা মাটির তৈরি সামগ্রী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ঘরে ঘরে হাজার হাজার মাটির ব্যাংক, পুতুল ও অন্যান্য খেলনা তৈরি করা হয়েছে।

এ নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা আক্তার বলেন, ‘মৃৎশিল্প হচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। আমরা চাই শিল্পটা বেঁচে থাকুক। মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে কোনো ধরনের সহায়তার সুযোগ থাকলে তা অবশ্যই করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত