Ajker Patrika

প্লাস্টিক-পলিথিনে নগরে বাড়ছে জলাবদ্ধতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়, যার ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য। এই ২৪৯ টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ (প্রায় ১৪০ টন) অসংগৃহীত থেকে যায়। আর এই প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যই চট্টগ্রাম নগরে জলাবদ্ধতা বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। 

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী পিয়াল বডুয়া ও আল আমিন প্রতিষ্ঠানটির পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিতের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সোলতান আহমদ হলে গবেষণা প্রবন্ধটি উপস্থাপন করা হয়। গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতা করে বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম।

এ বিষয়ে পরিবেশকর্মী দিলরূবা খানমের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সাংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গবেষণা প্রবন্ধের মডারেটর অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিত, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, সহসভাপতি লোকমান দয়াল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আলীউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম পেয়ার আলী সদস্য জসিম উদ্দিন  প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

তাঁরা বলেন, রিসাইক্লিংয়ের জন্য সংগ্রহ না করায় এই সব বর্জ্য নগরীর খাল ও নালায় মিশে পরিবেশ মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। এই প্লাস্টিক পলিথিনের কারণে বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও পানি দূষণ।  

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত্রতত্র প্লাস্টিক ছুড়ে ফেলা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অভাব, প্লাস্টিক পোড়ানো, প্লাস্টিক দূষণের কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতা, অপচনশীলতা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিক বর্জ্যে দূষণ দিন দিন বাড়ছে।

এসব সমস্যার প্রতিকার হিসেবে গবেষণায় বলা হয়, সড়ক কার্পেটিংয়ে বিটুমিনের সঙ্গে ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক ও পলিথিন মেশানোর ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে। প্রতি কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। সেই সঙ্গে তৈরি সড়ক দ্বিগুণ স্থায়ী হবে।

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল মাহমুদ বলেন, জলাবদ্ধতার পেছনে প্লাস্টিক বর্জ্যই অনেকাংশে দায়ী। সিটি করপোরেশন ঠিকমতো বর্জ্য অপসারণ করলে নগরীর নালা ও খালে তেমন কোনো বর্জ্য থাকত না। কিন্তু এখন খাল-নালায় বর্জ্যের স্তূপ দেখা যায়। যেগুলো অধিকাংশই প্লাস্টিক বর্জ্য। 
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, জলাবদ্ধতার পেছনে প্লাস্টিক বর্জ্য দায়ী এটি আংশিক সত্য। তবে এখন যেসব কারণে চট্টগ্রাম নগরে জলাবদ্ধতা হচ্ছে তার পেছনে খাল-নালায় বাঁধ থাকাকে তাঁরা বেশি দায়ী মনে করছেন। এর পাশাপাশি সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি একটা কারণ। এখন বৃষ্টির সময় জোয়ারের পানি অনেক বেড়ে যায়।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ করি। এরপর নালায় যেসব বর্জ্য পড়ে সেগুলোও সংগ্রহ করা হয়। তবে এরপরও কিছু কিছু বর্জ্য বিক্ষিপ্তভাবে অসংগৃহীত থেকে যায়। তবে সেটি কোনোভাবে ১০ থেকে ২০ শতাংশ হওয়ার কথা না। তাঁরা (গবেষক) কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছেন, কার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেটি তাঁরাই ভালো জানেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত