Ajker Patrika

শঙ্কা সত্য করে আবার বন্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১৩: ৩৭
Thumbnail image

সিলেট আবহাওয়া অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এই শঙ্কার বার্তা দিয়েছিলেন। গত বন্যার ধকল এখনো কাটিয়ে ওঠার আগেই সেই শঙ্কাকে সত্যি করে সিলেটে আবারও হানা দিয়েছে বন্যা। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছের সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

সিলেট: পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর, খাদিমপাড়া, টুকেরবাজার, জালালাবাদ, মোগলগাঁও, কান্দিগাঁও, হাটখোলা ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের হাট-বাজার, মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ভিটে-বাড়ি, রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে অনেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে গতকাল বুধবারও সকাল থেকে কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে কোথাও হাঁটু পানি ছিল, কোথাও কোমরসমান পানি। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক বলেন, ‘বন্যাকবলিত এলাকায় চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমাদের মনিটরিং সেল থেকে ওই এলাকাগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বলেন, ‘বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি, বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’

কানাইঘাট: প্লাবিত হয়েছে কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল সকাল থেকে কানাইঘাট উপজেলার নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার গ্রামীণ জনপদে মানুষজন দ্বিতীয় বারের মতো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সুরমা নদীর ডাইক ভাঙা থাকায় গ্রামাঞ্চলে পানি বাড়ছে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সড়ক। গতকাল তোলা ছবিকোম্পানীগঞ্জ: গত মাসে হয়ে যাওয়া বন্যার ক্ষত এখনো শুকায়নি। স্বাভাবিক হয়নি মানুষের থাকার পরিবেশ। এরই মধ্যে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। এবারও বন্যার কারণ টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। ঘরের ভেতরে পানি উঠে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা। গত সোমবার বিকেল থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত বন্যার পানি বেড়েছে। এ সময়ে ধলাই ও পিয়াইন নদীর পানি উপচে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকাল বিকেলে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, বন্যার্তদের জন্য ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট: গোয়াইনঘাট উপজেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মানুষের বসতবাড়িতে পানি উঠে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। উপজেলার পানিবন্দী মানুষের মাঝে এখন প্রতিনিয়ত এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত নদ-নদীতে বন্যার পানি দ্রুত বাড়ছে। উপজেলার সব কটি ইউনিয়নেই হু হু করে বাড়ছে পানি। যেন ভয়াল বন্যায় বিপর্যস্ত গোয়াইনঘাটের জনজীবন। ইউএনও মো. তাহমিলুর রহমান বলেন, গোয়াইনঘাটে আবারও বন্যায় বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

জৈন্তাপুর: জৈন্তাপুর উপজেলার ছয় ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সারী ও বড় নয়াগং নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বিপৎসীমার ২০ দশমিক ০৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইউএনও আল বশিরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, বন্যায় প্লাবিত এলাকার খোঁজ রাখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত