Ajker Patrika

লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশ ধানও সংগ্রহ হয়নি

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
Thumbnail image

নরসিংদীর রায়পুরায় সরকারিভাবে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের সময় ছিল গত মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। চলতি মৌসুমে উপজেলার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ১০৩ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৩ মেট্রিক টন। সে হিসাবে এবার ধান সংগ্রহের হার লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশেরও কম। তবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মাত্র ১০ কেজি পিছিয়ে উপজেলা খাদ্যগুদাম।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সরকারনির্ধারিত ধানের দামের ব্যবধান বাজারমূল্যের সঙ্গে খুবই কম ছিল। সরকারি গুদামে ধান নিয়ে বিক্রি করতে অনেক টাকা পরিবহনে ব্যয় হতো। এ ছাড়া এর সঙ্গে জড়িত ছিল নানা রকম শর্ত। এর চেয়ে খোলাবাজারে বিক্রি করলে তুলনামূলক বেশি লাভ। তাই চলতি মৌসুমে সরকারি গুদামে অনেকেই ধান বিক্রি করেননি।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি দামের তুলনায় বাজারদর বেশি হওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের মধ্যে অনাগ্রহ ছিল।
উপজেলা খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা যায়, এবার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ হাজার ২৯৪ মেট্রিক টন। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মাত্র ১০ কেজি বাদে চাল সংগ্রহ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হাট-বাজারে এখন প্রতি মণ মোটা ধানের দাম ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা। আর চিকন ধানের দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৯০ টাকা। সরকারি গুদামে ধানের মণপ্রতি নির্ধারিত দাম ছিল ১ হাজার ৮০ টাকা।

কৃষক মজনু মিয়া বলেন, সরকারিভাবে ধান যে টাকায় কেনা হচ্ছে, খোলাবাজারেও একই কিংবা কম পার্থক্যে বেচাকেনা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিলার বলেন, ধান কিনে চাল করতে সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে ৩৮-৩৯ টাকা। খোলাবাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৪ টাকা; কিন্তু সরকারিভাবে মূল্যনির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ টাকা। এতে কেজিতে লোকসান হয় ৬-৭ টাকা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ধান ও চালের মূল্য গত বছরের মতোই ছিল। কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ধান কেনা হয়েছে। তবে এ বছরেও সরকারিভাবে ধান কৃষকদের আগ্রহ কম ছিল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ধান বিক্রিতে সরকারি দামের তুলনায় বাজারদর কিছুটা বেশি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ কম লক্ষ্য করা গেছে। তারপরও কৃষি বিভাগ বোরো ধান সংগ্রহে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্যগুদাম নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাজ ধান-চাল সংগ্রহ ও বিতরণ করা। এ বছরও চাল সংগ্রহ বেশ ভালো। তবে ধান সংগ্রহ খুবই কম হয়েছে।’

এর কারণ হিসেবে মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বাজারে ধান-চালের দাম বেশি। তাই গুদামে ধান দিতে কৃষকের আগ্রহ কম। এর আরও একটি কারণ হতে পারে যে কৃষকেরা তো আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নন, আর মিলারেরা চুক্তিবদ্ধ। তাই চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত