Ajker Patrika

সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১১: ২৮
Thumbnail image

সাংবাদিককে বাসায় ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ ও প্রতীকী সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে জেলা শহরের মোক্তারপাড়া প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ‘নেত্রকোনা বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ’ এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান। সমাবেশ পরিচালনা করেন সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি আলপনা বেগম। বক্তব্য দেন- ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি শ্যামলেন্দু পাল, প্রথম আলোর প্রতিনিধি পল্লব চক্রবর্তী, সমকালের খলিলুর রহমান শেখ, জনকণ্ঠের সঞ্জয় সরকার, যমুনা টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক কামাল হোসাইন, নিউজ টুয়েন্টি ফোরের সোহান আহমেদ, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, আমাদের নেত্রকোনা পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, এনটিভির ভজন দাশ, এশিয়ান টিভির আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর জেলা প্রশাসন থেকে সোমেশ্বরী নদীর পাঁচটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি চক্রের সদস্যরাই প্রতিবছর বালুমহালের ইজারা পান। ওই চক্রের প্রধান পৌর মেয়র আলাউদ্দিন। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ইজারাদারেরা বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করেন। সহস্রাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হয়। হাজার হাজার ট্রাক ও লরি দিয়ে বালু পরিবহন করার ফলে পৌর শহরের প্রধান সড়কসহ সব রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে।

একাত্তর টিভির দুর্গাপুর প্রতিনিধি রিফাত আহমেদ বালু নিয়ে প্রতিবেদনসহ গত বুধবার সন্ধ্যায় ‘বালুমহাল ইজারার নামে সোমেশ্বরী নদী ধ্বংসের কথা’ উল্লেখ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তবে স্ট্যাটাসে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। ওই স্ট্যাটাসে ক্ষুব্ধ হয়ে রিফাতকে বাসায় ডেকে নিয়ে মেয়র আলাউদ্দিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বালুর নিচে পুঁতে মেরে ফেলার হুমকি দেন। সে সময় ধারণ করা ৯ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের একটি অডিওতে মেয়র একজনকে লাঠি আনার নির্দেশ দেন। . . রিফাতকে এলাকা ছাড়া করার কথা শোনা যায়। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র ও তাঁর লোকজন রিফাতের বাবা রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে হুমকি-ধমকি দেন। ওই দিন গভীর রাতে রিফাতের বাসার গেট ও সামনের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ওই সাংবাদিক গত শুক্রবার দুপুরে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

রিফাত আহমেদ বলেন, ‘আমি সোমেশ্বরী নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে বেশ কয়েকবার প্রতিবেদন করেছি। এর পর থেকেই বালু ব্যবসায়ীরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত। বুধবার পরিবেশ ধ্বংসের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে কারও নাম উল্লেখ করিনি। বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। ব্যক্তিগতভাবে মেয়র ক্ষুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীও গালমন্দ করেন।

প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র আলাউদ্দিন বলেন, ‘রিফাতকে ডেকে এনে শাসন করেছি। ফেসবুকে আমার নাম উল্লেখ না করলেও আমার বিরুদ্ধে আগে নিউজ করেছে। তাঁকে গালিগালাজ করেছি, অস্বীকার করছি না।’

দুর্গাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রিফাত আহমেদের অভিযোগটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত