Ajker Patrika

বাসায় এনে অনৈতিক সম্পর্ক, টাকা না দেওয়ায় মিল কর্মকর্তাকে হত্যা

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে মিল কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে মিল কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরে কারখানা কর্মকর্তাকে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারের পর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে তাঁরা হত্যার কারণ সম্পর্কেও জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা জানান, নিহত ব্যক্তি ফাঁকা বাসায় ঘটনার রাতে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা বলে আসামিদের বাসায় ডেকে আনেন। কিন্তু পরে টাকা না দিয়ে মোবাইলে শারীরিক সম্পর্কের ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা চাকু দিয়ে ওই ব্যক্তির গলা ও ঊরুতে আঘাত করে হত্যা করেন।

আজ বুধবার পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সুপার জানান, নিহত কারখানা কর্মকর্তার নাম রফিকুল ইসলাম (৪৮)। তিনি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর আমবাগ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় ৬-৭ বছর সপরিবারে বসবাস করেন এবং গাজীপুর ফিড মিল লিমিটেড কারখানায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে চাকরি করতেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, বগুড়া জেলা সদর থানার মৃত খলিল শেখের ছেলে নয়ন (২১) এবং একই জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার মানিকদারচর (টেংরাকুরা) গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে আল আমিন (১৯)। আসামিরা গাছা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

পুলিশ সুপার জানান, ১৯ জুলাই রফিকুল ইসলামের ছেলে রাতুল আহামেদ এবং তাঁর স্ত্রী গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে যায়। সেই দিন রাতে তিনি ফাঁকা বাসায় গ্রেপ্তার আসামিদের ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে অনৈতিক কাজের জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু পরে তিনি আসামিদের টাকা না দিয়ে অনৈতিক কাজের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে আসামিরা তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কর্মকর্তাকে চাকু দিয়ে গলা ও ঊরুতে আঘাত করলে তিনি মারা যান।

এসপি আবুল কালাম আজাদ জানান, রোববার (২০ জুলাই) সকালে ওই কর্মকর্তার ছেলে রাতুল আহামেদ তাঁর বাবার মোবাইলে ফোন করলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে তিনি বাসায় খোঁজ নেওয়ার জন্য তাঁর দুই বন্ধুকে পাঠান। তাঁরা দুপুরের দিকে বাসায় গিয়ে দেখেন বাইরে থেকে তালা দেওয়া। পরে বাড়ির মালিককে ডেকে দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে রফিকুলকে মৃত অবস্থায় খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে রাতুল আহামেদ বাদী হয়ে জিএমপির কোনাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এসপি বলেন, এ ঘটনায় পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পিবিআই গাজীপুর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান পরিচালনা করে। গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) রাত দেড়টায় নগরীর গাছা থানাধীন কুনিয়া মোতালেব মার্কেট এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পরের দিন ২২ জুলাই বিকেলে আসামিদের গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। শারীরিক সম্পর্কের কথা বলে ৫ হাজার টাকায় ভাড়া করে বাসায় ডেকে নিয়ে আসার পর টাকা না দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও গোপনে ধারণ করে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা চাকু দিয়ে রফিকুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জমকালো দোতলা বাড়িতে দূতাবাস, সামনে সারি সারি কূটনৈতিক গাড়ি—৭ বছর পর জানা গেল ভুয়া

অবশেষে রাজি ভারত, ‘জিতেছে বাংলাদেশ’

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটেই ১৯ ফ্রিজ, আরও বিপুল ব্যবহার সামগ্রী উঠছে নিলামে

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে পলাতক আসামি

বাংলাদেশ ব্যাংকে নারীদের শর্ট স্লিভ ড্রেস ও লেগিংস নিষেধ, পরতে হবে ‘শালীন’ পোশাক-হিজাব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত