Ajker Patrika

হাটভরা পশু, ক্রেতা কম ক্ষতির শঙ্কায় বিক্রেতা

রাশেদুজ্জামান, মেহেরপুর
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৩: ৩২
Thumbnail image

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। কিন্তু শেষ সময়ে এসেও মেহেরপুরের কোরবানির পশুহাটের বেচাকেনা জমে ওঠেনি। গতকাল শুক্রবার হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় খামারিরা পশু বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা এবার লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

হাট ইজারাদাররা বলছেন, প্রতি হাটে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ গরু বিক্রি হচ্ছে আর বাকি গরুগুলো নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে খামারি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

মেহেরপুর সদর উপজেলার শালিখা গ্রামের খামারি জিল্লুর রহমান এবার কোরবানির জন্য ৩৩টি গরু লালন-পালন করেছিলেন। এর মধ্যে ২৩টি গরু পাঠিয়েছেন রাজধানীর গাবতলীতে। আর বাকি ১০টি গরু নিয়ে শুক্রবার সকালে এসেছেন গাংনী উপজেলার বামন্দী পশুহাটে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় এখনো তাঁর গরুগুলো বিক্রি করতে পারেননি।

ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে গরু বিক্রি করলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে জিল্লুর রহমানকে।

জিল্লুর বলেন, ‘ভেবেছিলাম করোনার বিধিনিষেধ কাটিয়ে এবার কোরবানিতে হয়তো গরু পালন করে লাভের মুখ দেখব। কিন্তু অব্যাহত গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে চিন্তায় ছিলাম। গরু বিক্রি করতে এসে চিন্তা আরও বেড়েছে গেছে।’

তিনি জানান, ৯০০ টাকার এক বস্তা গো-খাদ্য এবার কিনতে হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। ঘাসের দামও ছিল দ্বিগুণ। এত টাকা খরচ করে গরু পালন করে এখন লোকসানের মুখে। আর এ গরু যদি আরও এক বছর লালন-পালন করতে হয় তাহলে খরচ হবে দ্বিগুণ।

মেহেরপুর শহরের খামারি হিরা বলেন, ‘এবার কোরবানির জন্য ৪২টি গরু প্রস্তুত করেছিলাম। এখন পর্যন্ত ২২টি গরু বিক্রি করতে পেরেছি। বাকিগুলো বিক্রি করতে পারব কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। আর সব গরুই ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার ওপরে। এখন এ গরু বিক্রি করতে না পারলে আবারও একটি বছর লালন পালন করতে হবে। এত বড় গরু খাবার খাইয়ে লালন-পালন করে কোনো লাভ হবে না, বরং লোকসানের পাল্লা ভারী হবে। তাই লোকসান হলেও গরুগুলো বিক্রি করতে হবে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী দিঘরপাড়া গ্রামের জলিল হোসেন বলেন, ‘এবারের হাটে প্রচুর গরু উঠেছে। প্রতি বছর ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে অনেক ব্যবসায়ী চলে আসেন মেহেরপুরের হাটগুলোতে। সেসব ব্যবসায়ীদেরও কম দেখা যাচ্ছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত যে বেচাকেনা সেটি হচ্ছে না। সীমান্ত দিয়ে গরু না আসায় ভেবেছিলাম এবার বেচাকেনা ভালো হবে। কিন্তু তাও হচ্ছে না।’

ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী নাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ ট্রাক গরু ঢাকাতে পাঠিয়েছি। সেখানে বেচা-কেনা কম। কারণ ঢাকা ও চট্টগ্রামের মানুষ এবার অনলাইনে পশু কিনছেন বেশি। এ কারণে সেখানকার হাটগুলো এখনো জমে ওঠেনি। তা ছাড়া পারিবারিক পর্যায়ে গরু পালকারীরা তাঁদের গরু ইতিমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিছু গরু আছে খামারিদের মধ্যে। তাঁদের কেউ কেউ হয়তো ঢাকা চট্টগ্রাম নিয়ে যাবেন। আর হাটে বেশি দামে গরু কিনতেও ভয় পাচ্ছি। কারণ বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

বামন্দী পশুহাটের ইজারাদার আমিরুল ইসলাম বলেন, গত সোমবারে এ হাটে গরু উঠেছিল ৪ হাজারের ওপরে। অথচ বিক্রি হয়েছিল আড়াই হাজারের মতো। গতকালও ৪ হাজারের ওপরে গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা কম। বেচাকেনার ওপর নির্ভর করবে আজ (শনিবার) হাট বসবে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত