Ajker Patrika

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাকি মাংসের দোকান?

সম্পাদকীয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাকি মাংসের দোকান?

একটি কলেজের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে তৈরি করা হয়েছে মাংসের দোকান। ঘটনাটি দেশের এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘটেনি, যেখানে আইনের হাত সুপ্রশস্ত নয়। ঘটনাটি ঘটেছে খোদ রাজধানীর উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে। এখানে ক্লাস হয়, শিক্ষকেরা ক্লাস নেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে আর তার পাশাপাশি কসাইরা মাংস কাটেন।

স্কুল বা কলেজের আশপাশে কসাইয়ের দোকান থাকা যাবে না, এমন কোনো আইন আছে বলে মনে হয় না। যদিও মাংসের দাম বাড়তে বাড়তে এমন অস্বাভাবিক জায়গায় চলে গেছে যে সাধারণ চাকুরে কিংবা স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে গরু-ছাগল-দেশি মুরগি খাওয়ার স্বপ্ন আসলে দিবাস্বপ্নের মতো হয়ে উঠেছে। মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। আমিষ সংগ্রহের জন্য কোন বিকল্প পথ নেওয়া যায়, সে কথা ভাবছে তারা। কিন্তু এমন অনেক মানুষ এই সামাজিক প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যাদের হাতে অঢেল টাকা। রাজনীতির নানা অলিগলিতে তারা পেয়ে যায় টাকার সন্ধান। সেই ভ্রষ্ট রাজনীতির কোনো উপাদান যুক্ত হয়ে স্কুলের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে মাংসের দোকান তৈরিতে অবদান রেখেছে কি না, সেটা দেখার বিষয়।

আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটিতে দেখা যাচ্ছে, মাংসের দোকানের মালিক মো. ওসমান গণি দোকান ভাড়ার চুক্তি, ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদির ব্যাপারে অকপটে বলেছেন, ‘এটা পরে বলব। এখন বলা যাবে না।’ এখানেই আমাদের প্রশ্ন: এখন কেন বলা যাবে না? শিক্ষালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে মাংসের দোকান করার অনুমতি কে দিল? এই দোকানের আইনি কোনো ভিত্তি আছে কি? এ ব্যাপারে উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না কেন? তাঁর কি কিছুই বলার নেই? তাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে তাঁর মত কী? ২০১৫ সালে একটি এটিএম বুথ করার জন্য কর্তৃপক্ষ একটি জায়গা বরাদ্দ করেছিল। এটিএম বুথ হয়নি, সেখানে কেন গড়ে উঠল মাংসের দোকান?

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওমরাহ পালন করার জন্য সৌদি আরবে গেছেন। তাই এ ব্যাপারে তাঁর মতামতও নেওয়া যায়নি। কিন্তু এ কথা তো মানতেই হবে, এ রকম একটি মাংসের দোকান বসে গেল প্রতিষ্ঠানটির জমিতে, অথচ তা ঘটল কলেজের পরিচালনা কমিটি এবং প্রিন্সিপালের অগোচরে—এমনটা হতেই পারে না। কেন এবং কীভাবে মাংসের দোকানের মালিক এখানে দোকানটি পেলেন, সেটা জানা দরকার। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানেনই না, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর কসাইরা একই জায়গায় যে যাঁর কাজ করে যাচ্ছেন!

তদন্তের জন্য অবশ্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তাঁর দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে মাংসের এ দোকানটি এখানে আর থাকার কথা নয়। আর যদি ‘কোনো কারণে’ তিনি মৌন হয়ে যান, তাহলে পৃথিবীর একমাত্র স্কুল-কলেজ-মাংসের দোকান হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানটির নাম গিনেস বুকে ওঠানোর কথা ভাবা যেতে পারে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত