Ajker Patrika

নেই বেষ্টনী, পদচারী সেতু

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১৪: ১৮
নেই বেষ্টনী, পদচারী সেতু

কুমিল্লার বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠঘেঁষা ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল লাইন রেলপথ। আশপাশের গ্রামের অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের রেললাইন পার হয়ে ক্লাসে আসে। কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেরই রেললাইন পার হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হওয়ার বয়স হয়নি। তাই তারা স্বভাবতই অসচেতনভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। এ ছাড়া রেললাইন লাগোয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কোনো সীমানাপ্রাচীর কিংবা নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। এই অংশে নেই কোনো পদচারী সেতুও।

অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে রেলপথ ও সড়ক পারাপারের বিষয়টি আগেই তাদের নজরে এসেছে। এ জন্য রেললাইন ও মহাসড়কের ওপর পদচারী সেতু নির্মাণের দাবি ছিল। কিন্তু প্রশাসন সেদিকে পাত্তা দেয়নি। এদিকে বিজয়পুরে ট্রেনে কাটা পরে তিন স্কুলছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকে দায়ী করছে রেল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, বিজয়পুর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সীমানাপ্রাচীর কিংবা নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় সময় ও দূরত্ব বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বিজয়পুর মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখশেদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে প্রায় এক হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে। যাদের বাড়ি রেললাইনের পশ্চিম পাশে তাদের রেল লাইন অতিক্রম করতে হয় না। কিন্তু পূর্ব পাশের বিজয়পুর, বারপাড়া দুর্গাপুরসহ আশপাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী কুমিল্লা নোয়াখালী মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ পার হয়ে আসতে হয়। স্কুলের সামনে কোনো পদচারী সেতু না থাকায় যে যেভাবে পারছে রাস্তা এবং রেললাইন পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসছে। তিনি দাবি করেন, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও পদচারী সেতুর বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও লাভ হয়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন মজুমদার জানান, বিজয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিজয়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কাছাকাছি দূরত্বে পাঁচটি বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই শিশু। তিনি বলেন, শিশুদের কথা বিবেচনা করে আমরা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা জানিয়েছেন, এই স্থানে পদচারী সেতু করার প্রকল্প নেই। তবে সেই সময় রেলওয়ের কর্মকর্তারা এ-ও মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন, সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত এলে এখানে পদচারী সেতু তৈরি করা হবে।

রেলওয়ে কুমিল্লার উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, রেললাইনের ওপর সব সময় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায়, এ দায় কোনোভাবেই রেল কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তায় না। তা ছাড়া বিজয়পুর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সীমানাপ্রাচীর কিংবা নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় সময় ও রাস্তা বাঁচাতে রেললাইন পার হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে শিক্ষার্থীরা। এ দায় প্রতিষ্ঠানের ও অভিভাবকদের অসচেতনতার। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে বিজয়পুর স্কুল এলাকার রেলপথটিতে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরির বিষয়টি দেখব।

এদিকে গত বুধবার বিজয়পুরে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সদস্য ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান জানান, বিজয়পুরে রেললাইনের পাশে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রেল কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রেললাইনের দুই পাশে বেষ্টনী, প্রতিষ্ঠানের দেয়াল নির্মাণের বিষয়টি দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত