Ajker Patrika

বাসের দখলে সব সড়ক

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৪১
Thumbnail image

ধীর গতির কারণে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ। তাই টার্মিনালের বাসগুলো দখল করে নিয়েছে দক্ষিণ সুরমার সব সড়ক। সড়কে সড়কে বাসের দীর্ঘ সারি। রাস্তা দখল করে বাস রাখায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। যানজটে আটকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে মানুষের।

দক্ষিণ সুরমায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, টার্মিনালের নির্মাণকাজ চলায় ভেতরে গাড়ি রাখার সুযোগ নেই। সব গাড়ি টার্মিনালের বাইরে সড়কের পাশে পার্কিং করা। টার্মিনালের সামনে থেকে আশপাশের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সারি সারি বাস রাখা।

প্রায় সাড়ে ৭ একর জমিতে গড়ে তোলা কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায় এবং প্রবেশ করে। অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে এর দ্বিগুণ বাস চলাচল করে। তাই সড়কে রাখা এত গাড়ির চাপে যানজট দেখা দেয়।

বাস টার্মিনালের পাশে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। স্টেশনের প্রবেশপথের দুই পাশেও বড় বড় বাসের সারি। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটে পড়ে অনেকে ট্রেন সময়মতো ধরতে পারেন না।

কদমতলী এলাকার বাসিন্দা আলিম উদ্দিন বলেন, গত দুই বছর ধরে যানজটে মানুষের দুর্ভোগ আর ভোগান্তির শেষ নেই। অনেক সময় রোগীরাও হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এ সড়ক ব্যবহার করতে হয়।

২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ভেঙে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিটি করপোরেশন। ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় এখনো অর্ধেক কাজই হয়নি।

সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, টার্মিনালে বাস রাখতে না পারলেও গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সিটি করপোরেশন নিয়মিত লিজের টাকা নিচ্ছে। তাদের উদাসীনতার কারণেই টার্মিনালের কাজে গতি আসছে না। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় গাড়ি রাখতে হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘করোনা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। তবে এ বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আমরা।’

নগরীর দক্ষিণ সুরমায় অবস্থিত কদমতলী বাস টার্মিনাল। সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাস টার্মিনাল এটি। জেলার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক পথে যোগাযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ টার্মিনাল আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় দুটি কাজ করা হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে ডাম্পিং গ্রাউন্ড নির্মাণ, অপরটি টার্মিনালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য ৫৬ কোটি টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। আধুনিক টার্মিনালে প্রত্যেক রুটের জন্য আলাদা পার্কিং জোন, প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা রাস্তা থাকবে। টার্মিনালে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা দুর্ঘটনার শিকার কাউকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে আলাদা কক্ষ থাকবে বলেও জানিয়েছেন নুর আজিজুর রহমান।

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একটি বাস টার্মিনাল হবে এটি। আন্তর্জাতিকমানের বাস টার্মিনালের যত সুবিধা থাকা দরকার, সবটাই এখানে থাকবে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিছু জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। জটিলতা কাটিয়ে এখন কাজে গতি পেয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত