Ajker Patrika

সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা

সম্পাদকীয়
সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা

বড় বড় সব দুর্নীতির খবর বের হওয়ার পর ছোট দুর্নীতি নিয়ে আলোচনায় নিশ্চয়ই কেউ আনন্দ পান না। একসময় বলা হতো পুকুরচুরি। পরে পুকুরচুরি চাপা পড়ে যায় নদীচুরি, সাগরচুরির নিচে। বড় কিছু দেখলে মানুষ ছোটতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বছর কয়েক আগে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে অস্বাভাবিক দামে বালিশ কেনার খবর প্রচারের পর তুমুল আলোচনা চলেছিল দেশে। পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম ও অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের আসবাব ও অন্যান্য সামগ্রী অস্বাভাবিক দামে কেনা দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল।

ওই প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় পদে পদে দুর্নীতি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর ছাপা হয়। এতে বলা হয়, গণপূর্ত অধিদপ্তরে কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জোনভিত্তিক যে কেনাকাটা হয়ে থাকে, তার বার্ষিক একটি পরিকল্পনা থাকে। সে ক্ষেত্রে ৩০ কোটি টাকার নিচে কেনাকাটা হলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অনুমোদন লাগে না, স্থানীয় পর্যায়েই করা যায়। এর সুযোগ নিয়ে ১৬৯ কোটি টাকার কাজ ৬টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। ফলে প্রতিটি কাজের মূল্য ৩০ কোটি টাকার নিচে হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন পড়েনি। হয়েছিল ব্যাপক নয়ছয়। ওই খবর প্রকাশের পর সরকারি কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতি না কমে বরং বেড়েছে।

মানুষের মনে প্রশ্ন, দুর্নীতি হয় না কোথায় বা কোন ক্ষেত্রে? দুর্নীতিই যেন এখন নীতি। চোরের মায়েদেরই এখন বড় গলা। যে যত বড় দুর্নীতিবাজ, তার কদরই যেন বেশি। এখন বলার সময় এসেছে, সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা?

ওপরের কথাগুলো মনে এল, আজকের পত্রিকায় শুক্রবার প্রকাশিত ‘তিন হাজার টাকার ফ্যান ১০ হাজারে’ শিরোনামের খবরটি পড়ে। খবরে বলা হয়েছে, ১ টাকা দামের প্রতিটি খাম কেনা হয়েছে ৯ টাকায়। আর ৩ টাকার খাম ১৩ টাকায়। বাজারে ১২৮ জিবির যে পেনড্রাইভের দাম ১ হাজার টাকা, তা কেনা হয়েছে আড়াই হাজারে। ৩ হাজার ৩০০ টাকার ইউপিএসের দাম ধরা হয়েছে ৬ হাজার টাকা। আর ৩ হাজার টাকার ওয়াল ফ্যান ৯ হাজার ৯০০ টাকা দরে কেনা হয়েছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে কোটেশনের মাধ্যমে কেনাকাটায় এমন অস্বাভাবিক দাম পরিশোধ করে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন সরকারি ও বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য। দুর্নীতির সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে একটা দেশ চলতে পারে না। অন্যদিকে সরকারি দলের সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক বলেছেন, স্বীকার করতেই হবে যে দেশে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, দুর্নীতির সঙ্গে বসবাসই কি তাহলে আমাদের নিয়তি?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত