Ajker Patrika

ধান রক্ষার চেষ্টায় কৃষকেরা

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ৩৩
ধান রক্ষার চেষ্টায় কৃষকেরা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আধা পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক। ধান রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। ৭০-৮০ ভাগ পাকা ধান কিংবা আধা পাকা ধান কাটার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। তা ছাড়া দ্রুত ফসল কর্তন এবং বাঁধের প্রতি কঠোর নজরদারি রাখতে প্রতিটি এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

মদন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মদন উপজেলায় ১৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে এবার বোরো ধান আবাদ হয়েছে।

কয়েক দিন ধরে নদ-নদীর পানি বাড়ায় উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের তলার হাওরের কিছু এলাকা এবং মাঘান ইউনিয়নের পদারকোনা এলাকার প্রায় ১০ হেক্টর জমির আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

হাওরাঞ্চলের কৃষক পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র ভরসা উৎপাদিত বোরো ফসল। বোরো ফসল দিয়ে কৃষক পরিবারগুলো সারা বছরে সংসার খরচ চালায়; পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খরচও। কয়েক দিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চলে নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। এতে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চলের বোরো জমির ধান। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কৃষক পরিবারগুলো আতঙ্কে রয়েছে।

এদিকে অকালবন্যার কবল থেকে বোরো ফসল রক্ষার জন্য মদন উপজেলায় ২১টি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যে বাঁধের বাইরে জমিগুলো তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে যেকোনো সময় ফসলের মাঠ একাকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় কৃষকেরা দিনরাত বাঁধের পাশে সময় পার করছেন। অপর দিকে কৃষি অফিসের লোকজন ৭০-৮০ ভাগ পাকা ধান দ্রুত কর্তনের জন্য কৃষকদের নির্দেশ দিয়েছেন। এর সঙ্গে ফসল রক্ষা বাঁধের দিকে সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি রাখতে এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে।

পদারকোনা এলাকার কৃষক হাদিস, সোনা মিয়া; ফতেপুর এলাকার কৃষক আলী আহম্মদ ও শফর উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ করে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আমাদের জমির আধা পাকা ধান তলিয়ে গেছে। পানি যে হারে বাড়ছে, এতে যেকোনো সময় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা সারাক্ষণ বাঁধের দিকে নজর রাখছি। ’

ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার শফি বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের কৃষকদের বেশির ভাগ জমি তলার হাওরে। ফসল রক্ষা বাঁধের বাইরে যে জমি ছিল, তা সব তলিয়ে গেছে। এখন বাঁধের ভেতরের জমি রক্ষার জন্য স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে বাঁধের ওপর সময় দিচ্ছি। কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ৭০-৮০ ভাগ পাকা ধান দ্রুত কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রতিটি এলাকায় মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে পানি ঢুকছে। একমাত্র বোরো ফসল রক্ষার জন্য আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘আমি উপজেলার প্রতিটি হাওর নিয়মিত পরিদর্শন করছি। ফসল দ্রুত কর্তনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এর সঙ্গে ফসল রক্ষা বাঁধের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত