Ajker Patrika

প্রধান সড়কে বড় গর্ত ঠেলে ঠেলে যান পার

ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী)
প্রধান সড়কে বড় গর্ত ঠেলে ঠেলে যান পার

জাতীয় উদ্যান হিসেবে প্রসিদ্ধ নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক বেহাল। একাধিকবার জলোচ্ছ্বাসে সড়কের অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জোয়ারের রাতে সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়েছে ওপরের আরসিসি ঢালাইয়ের বিভিন্ন অংশ। ফলে প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

জানা গেছে, ১৪ বছর আগে তৈরি এই সড়ক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে একাধিকবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিটি জলোচ্ছ্বাসের পর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সামান্য মাটি দিয়ে খানাখন্দ ভরে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন চলার পর তা আবার গর্তে পরিণত হয়। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে এই সড়কের ওপর দিয়ে ছয় ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। এতে অনেক জায়গা ভেঙে খালে পরিণত হয়।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি ২০১০ সালে আইলা প্রকল্প থেকে করা হয়। বন্দরটিলা ঘাট থেকে নামার বাজার সৈকত পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারের এই সড়ক আরসিসি ঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, গত ছয় মাসে এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনায় পড়েন। এর মধ্যে গত জুলাই মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিঝুম দ্বীপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সম্পদ মারা যায়। সম্পদ নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলা উদ্দিনের ছেলে।

ইউপি সদস্য আল উদ্দিন বলেন, সম্পদ এক বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে নামার বাজার যাওয়ার সময় খাদে পড়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। নিঝুম দ্বীপ প্রধান সড়কের বাতায়ন কিল্লা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাকে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। একইভাবে নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ধানবোঝাই একটি টমটম উল্টে এক কৃষকের একটি পা ভেঙে যায়।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা নুর নাহার বেগম বলেন, প্রধান সড়ক বেহাল হওয়ায় দ্বীপের পশ্চিম অঞ্চলের অনেক রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতে পারেন না।

নিঝুম দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন বলেন, সড়কপথে নিঝুম দ্বীপে আসা পর্যটকদের এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ নেই। ফলে অস্বাভাবিক জোয়ারে এই সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। অনেক আগে তৈরি করা সড়কটি বিভিন্ন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গেলেও তা মেরামত করা হয়নি। ইউপি থেকে মাঝেমধ্যে মাটি দিয়ে গর্ত ভরে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে তা আরও দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। সড়কটি নতুন করে তৈরি করতে সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, সড়কটি আরসিসি ঢালাই দিয়ে তৈরি করায় মেরামত করা যায় না। এটি সম্পূর্ণ নতুন করে তৈরি করতে হবে। ইতিমধ্যে সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের আধা সরকারি পত্রসহ (ডিও লেটার) একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুত সড়কটি নতুনভাবে তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত