Ajker Patrika

কেঁচো সারে লাখপতি

মনজুর রহমান, লালমোহন (ভোলা) 
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৫৬
কেঁচো সারে লাখপতি

ভোলার লালমোহনে কেঁচো সার উৎপাদন করে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি নিজের ভাগ্যবদল করেছেন যুবক মঞ্জুর হোসেন। মাত্র ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করে এখন তিনি লাখপতি। এলাকায় গড়ে তুলেছেন কেঁচো বা জৈব সারের খামার।

কেঁচো সার ব্যবহার করায় একদিকে যেমন ফসলের উৎপাদন ভালো হচ্ছে, অন্যদিকে রাসায়নিকের জন্য বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে না কৃষকদের। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কেঁচো সার। মঞ্জুকে দেখে গ্রামের অনেক যুবক ও নারীরা এখন ঝুঁকে পড়ছেন বিষমুক্ত জৈব সার উৎপাদনে।

লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার যুবক মঞ্জুর হোসেন কৃষকদের কাছে পরিচিত নাম। তাঁর তৈরি কেঁচো সার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

জানা গেছে, ফসলের খেতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে গেলে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হয়। ঠিক তখনই স্বল্পমূল্যের কেঁচো দিয়ে তৈরি করা সার মিলছে কৃষকদের হাতের নাগালে। এতে ফসলের উৎপাদন ভালো হওয়ায় এই সারের দিকে ঝুঁকছেন কৃষক।

লালমোহনের পশ্চিম চরউমেদ গ্রামে মঞ্জুর হোসেন তৈরি করেছেন খামার। মাত্র ১ হাজার টাকা নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন ওই কেঁচো সারের খামার। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। মাত্র দুই বছরেই তিনি হয়ে উঠেছেন সফল খামারি।

মঞ্জুর হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘দুই বছর আগে কৃষি অফিস থেকে কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিই। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে তুলি ভার্মি কম্পোস্টের খামার। অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে এই সার বিক্রি করছি। কেঁচো, গোবর, কচুরিপানা, কলাগাছ, খড়কুটা ও সবজি দিয়ে ২৫-৩০ দিনের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে কেঁচো বা জৈব সার। রিং, কারেন্ট ও হাউস পদ্ধতিতে এ সার উৎপাদন করছি। অনলাইনে এ সার কুমিল্লা, যশোর, ঢাকা ও পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছি। নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কেঁচো সারের বিকল্প নেই।’

স্থানীয় নারী কৃষক ভুলু রানী বলেন, ‘মঞ্জুকে দেখে আমিও কেঁচো সার তৈরি শুরু করেছি। বর্তমানে ৮টি রিং দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন করছি আমরা।’ মঞ্জুরের দেখাদেখি ওই এলাকার ৫০ জন কৃষক-কৃষাণী কেঁচো সার উৎপাদন করছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় চাষি আবুল হোসেন বলেন, ‘ধান, ভুট্টা, মরিচ ও মুগডাল আবাদ করেছি এবার। অন্য সারের তুলনায় খরচ হয়েছে অর্ধেক। ফলনও হয়েছে ভালো।’

এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এমাজ উদ্দিন বলেন, ‘কেঁচো সার ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক ভালো। এ সার ব্যবহারে খরচও কমে। উপজেলায় কেঁচো সার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত