Ajker Patrika

৫ বছরেও শেষ হয়নি কাঁকড়া নদীতে সেতুর নির্মাণকাজ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
৫ বছরেও শেষ হয়নি কাঁকড়া নদীতে সেতুর নির্মাণকাজ

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে কাঁকড়া নদীতে সেতুর নির্মাণকাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। নানা অজুহাতে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মানুষ। তবে শিগগির কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তা।

উপজেলার প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঠিকাদারের বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ রাখায় সেতু নির্মাণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তাদের কয়েকবার চিঠি দিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। বর্ষা মৌসুমের পরে তারা পুনরায় কোনো সাড়া না দিলে বাতিল আবেদন চেয়ে বাকি কাজ শুরু করা হবে। তবে সেতুটির পিলারসহ অন্য কাজ মোটামুটি ৬০ ভাগ শেষ হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই সেতুর নির্মাণকাজ শেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া যাবে।

জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে উপজেলার দক্ষিণ এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল ভিয়াইল ও পুন্ট্রি ইউনিয়নের সংযোগস্থল কাঁকড়া নদীতে একটি সেতু নির্মাণের। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে অক্টোবর মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ১৭৫ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেতু নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা সদরে যাতায়াতে এই নদীই প্রধান সমস্যা। এ ছাড়া ভিয়াইল ও পুন্ট্রি ইউনিয়নের মানুষের প্রয়োজনীয় কাজ ও কৃষিপণ্য পরিবহনে এই নদীতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। এখানে বছরের প্রায় ৮ মাস পানি থাকে। এ কারণে বর্ষায় নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে চলাচল করতে হয়ে। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে।

উপজেলার বাসিন্দা রুবেল হোসেন ও ব্যবসায়ী জবেদ আলী বলেন, সেতু নির্মাণে যেমন ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে, সেসঙ্গে আছে সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাব। এ কারণে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় চলে গেলেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। একই এলাকার বাসিন্দা বিনু চন্দ্র বলেন, ওপারে ইউনিয়ন পরিষদে যেকোনো কাজে নদী পার হয়ে যেতে হয়। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে বা সমাবেশে গ্রামের সবাই একসঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদে যায়। কিন্তু মাত্র একটি নৌকা ঘাটে থাকায় সময়মতো সবাই একসঙ্গে পরিষদে যেতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতিতে সেতুটি নির্মাণ প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এত দেরি হওয়ায় আমরা চিন্তিত, কবে এর কাজ শেষ হবে কেউ বলতে পারছে না।

হিরা নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, ভিয়াইল ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তারা কৃষিকাজ ও মৎস্য চাষ করেন। কাঁকড়া নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প যে পথটি রয়েছে, সেটি প্রায় ৭ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। তা ছাড়া এই সেতুটি হচ্ছে দুই ইউনিয়নের সংযোগস্থল। তাই হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম এই সেতুটি দ্রুত মানুষের চলাচলের উন্মুক্ত করার দাবি জানাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত