Ajker Patrika

মেলার সরঞ্জামে মাঠ বন্ধ

সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা প্রতিনিধি 
Thumbnail image

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের আবদুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠটি চার মাস ধরে বন্ধ। স্থগিত হওয়া একটি হস্ত ও কুঠিরশিল্প মেলার সরঞ্জাম রেখে মাঠটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, ‘দ্রুত এসব সরঞ্জাম অপসারণ করে দ্রুত মাঠটি খুলে দেওয়া হোক।’

অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, ‘কর্তৃপক্ষ মেলাটি আবারও চালু করার চিন্তাভাবনা করছিলেন; কিন্তু তাঁদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তাঁরা শিগগির মেলার সরঞ্জাম অপসারণ করবেন।’

স্থানীয়দের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৩ মে জেবিন ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে হস্ত ও কুঠিরশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি মাসব্যাপী হওয়ার কথা ছিল। সে সময়ে ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য গত ১৭ জুন মেলাটি স্থগিত করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের নেতারা উপস্থিত হয়ে মেলা স্থগিতের ঘোষণা দেন। এরপর মেলা বন্ধ হলেও এখনো সরানো হয়নি মেলার সরঞ্জামাদি। চার মাস ধরে এ অবস্থায় পড়ে রয়েছে মাঠটি। এখানে স্থানীয় তরুণ ও কিশোরেরা খেলাধুলা করত। সে 
সঙ্গে নির্মল বাতাসে দৌড়াতেন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরাও। এখন এসব বন্ধ রয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ আবদুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মুছা মিয়া জানায়, ‘বিদ্যালয়ের ফুটবল খেলার মাঠটি বন্ধ রয়েছে কয়েক মাস ধরে। বাড়ির আশপাশেও কোনো খেলার জায়গা নেই। এখন মোবাইলে গেমস খেলেই অবসর সময় কাটে আমাদের।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লোকজন এই মাঠে ঘুরতে আসত। সারাদিনই তরুণদের বিভিন্ন দল খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকত এখানে। সেই মাঠ মেলার অবকাঠামো তৈরির সামগ্রী দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা দ্রুত এই মাঠ মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানাই।’

স্থানীয় ঘগোয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবিএ মিজানুর রহমান স্বপন (৫০) বলেন, ‘এই মাঠে বার্ষিক খেলাধুলা হতো। এবার সেই খেলা হচ্ছে ১২ কিলোমিটার দূরে বাজারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। এতে শিক্ষার্থীদের ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। মেলা স্থগিত করা হয়েছে সেই কবে আবার চালু হবে কি না তাও জানি না; কিন্তু মেলার সরঞ্জাম মাঠে থাকায় এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। খেলতে না পেরে এলাকার কিশোর-তরুণেরা ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে।’ 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব রায়চৌধুরী বলেন, ‘এই মাঠটি এখন আমার কাছে বিষফোঁড়া মনে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান উন্নয়নে আমি সাধ্যমতো কাজ করছি; কিন্তু ৪ মাস ধরে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা নিয়ে কিছুই করতে পারিনি। দ্রুত বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে এসব সরঞ্জাম সরানোর দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ মেলা আবারও চালু করার চিন্তাভাবনা করছিলেন; কিন্তু তাঁদের বারবার এ বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। আশা করছি তাঁরা শিগগির এগুলো অপসারণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত