উপল বড়ুয়া, ঢাকা
বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম সমস্যা শরণার্থী-সংকট। দেশে দেশে যুদ্ধ, উচ্ছেদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানুষ নিজ ভূমি ছেড়ে শত কষ্ট সয়েও একটু উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় পাড়ি দিচ্ছে উন্নত দেশে। বাংলাদেশের সাপেক্ষে রোহিঙ্গাদের কথা চিন্তা করুন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, বিশ্বে মোট শরণার্থীর সংখ্যা ২৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৬০ লাখ, যার অর্ধেক শিশু।
এসব শিশুর অনেকের পুরো জীবনই কেটে যায় কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা শিবিরে। আবার অনেকে নিজের প্রতিভা ও ভাগ্যের সহায়তায় বেড়ে ওঠে, জায়গা করে নেয় ইতিহাসে। এই সময়ের তেমনই তিন ফুটবলার কানাডার আলফানসো ডেভিস, অস্ট্রেলিয়ার আওয়ের মাবিল ও গারাং কুয়োল। প্রথমবারের মতো তিনজনকেই দেখা যাবে বিশ্বকাপে। শরণার্থীশিবির থেকে কাতার বিশ্বকাপে যাওয়া এই তিন তারকাকে নিয়ে এবারের আয়োজন।
আলফানসো ডেভিস: ৩৬ বছর পর এবার প্রথম বিশ্বকাপ খেলবে কানাডা। কনকাকাফ অঞ্চলের বাছাই পেরিয়ে কাতারের ভিসা পেয়েছে তারা। ফেবারিট হিসেবে নয়, কানাডীয়রা বিশ্বকাপে যাচ্ছে নিজেদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে। দলটির সবচেয়ে বড় তারকা ডেভিস। লেফট-ব্যাক ও উইঙ্গার—দুই পজিশনে খেলতে পারেন। ২২ বছর বয়সী এই তারকা বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তবে আজকের অবস্থানে ওঠে আসাটা সহজ ছিল না তাঁর। ডেভিসের জন্ম ঘানাইয়ান শরণার্থীশিবির বুদুবুরামে। গৃহযুদ্ধের সময় তাঁর লাইবেরিয়ান পিতা-মাতা দেশ ছাড়েন।
ইউএনএইচসিআর জানাচ্ছে, ডেভিসের পরিবার পরে কানাডায় অভিবাসী হিসেবে চলে আসে। বসবাস শুরু করে আলবার্টার এডমনটনে। তখন ডেভিস ৫ বছরের শিশু। এর ১০ বছর পর পেশাদারি ফুটবল শুরু তাঁর। এক বছর পর জাতীয় দলে অভিষেক। এ যেন স্বপ্নের শুরু। কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি। আর এখন চোট সত্ত্বেও বিশ্বকাপে ডেভিসকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন কানাডীয়রা।
আওয়ের মাবিল: বিশ্বকাপে খেলা বলতে গেলে যেকোনো ফুটবলারের স্বপ্ন। তবে মাবিলকে দেখে মনে হবে, এটা আর তেমন কী! ২৭ বছর বয়সে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে কাতার যাচ্ছেন কাদিজের এই অস্ট্রেলিয়ান উইঙ্গার। কিন্তু মনে তেমন উত্তেজনা নেই তাঁর। এর চেয়ে কঠিন সময় যে পার করে আসতে হয়েছে তাঁকে! জীবনের প্রথম ১০ বছর শরণার্থীশিবিরে কেটেছে এই তারকার।
মাবিলের মা-বাবা দক্ষিণ সুদানিজ। ১৯৯৪ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ছেড়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন জাতিসংঘ পরিচালিত কেনিয়ার শরণার্থীশিবির কাকুমায়। এক বছর পরে জন্ম হয় মাবিলের। শৈশব থেকে ফুটবলই ধ্যান-জ্ঞান তাঁর। প্লাস্টিক ব্যাগকে বল বানিয়ে খেলেছেন। মাবিলের পরিবার যখন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে চলে আসে, তখন তাঁর বয়স ১০। এরপর শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে এক কিশোর দলের হয়ে খেলে গোলদক্ষতায় নজর কাড়েন। উইং ধরে গতিময় দৌড় তাঁর শক্তির জায়গা। ২০১৪-১৫ মৌসুমে কিশোর বয়সে এ-লিগে অভিষেক।
অভিষেকেই ২৪ গোল, এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৮ সালে গায়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের জার্সি। অস্ট্রেলিয়া যে বিশ্বকাপ খেলছে, তাতে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। পেরুর বিপক্ষে বাছাইয়ের প্লে-অফে জিততেই হবে ম্যাচে টাইব্রেকারে জয়সূচক গোলটি করেন মাবিল।
গারাং কুয়োল: বয়স মাত্র ১৮ বছর, জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন মাত্র এক ম্যাচ। তবে বিশ্বকাপে আক্রমণভাগের জন্য কুয়োলের ওপর বিশ্বাস রাখছে অস্ট্রেলিয়া। মাবিলের মতো তাঁরও জীবন কেটেছে শরণার্থীশিবিরে। গৃহযুদ্ধের সময় আশ্রয়ের খোঁজে দক্ষিণ সুদান থেকে পালিয়ে মিসরে চলে আসে তাঁর পরিবার। অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর আগে ছয় বছর উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে ছিলেন তাঁরা। ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি অনুরক্ত কুয়োল ভলি সানসের যুব দলের হয়ে খেলা শুরু করে দৃষ্টি কাড়েন এ-লিগের এক দলের। এরপর মাত্র ১৬ বছর বয়সে যোগ দেন অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ লিগের ক্লাব সেন্ট্রাল কোস্ট ম্যারিনার্সে। গত বছর বার্সেলোনার বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে সংবাদের শিরোনাম হন কুয়োল। বার্সা তো বটেই, তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখায় নিউক্যাসলসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাব। তবে এখনো ম্যারিনার্সেই আছেন তিনি।
বিশ্বকাপ ফুটবল সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম সমস্যা শরণার্থী-সংকট। দেশে দেশে যুদ্ধ, উচ্ছেদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানুষ নিজ ভূমি ছেড়ে শত কষ্ট সয়েও একটু উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় পাড়ি দিচ্ছে উন্নত দেশে। বাংলাদেশের সাপেক্ষে রোহিঙ্গাদের কথা চিন্তা করুন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, বিশ্বে মোট শরণার্থীর সংখ্যা ২৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৬০ লাখ, যার অর্ধেক শিশু।
এসব শিশুর অনেকের পুরো জীবনই কেটে যায় কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা শিবিরে। আবার অনেকে নিজের প্রতিভা ও ভাগ্যের সহায়তায় বেড়ে ওঠে, জায়গা করে নেয় ইতিহাসে। এই সময়ের তেমনই তিন ফুটবলার কানাডার আলফানসো ডেভিস, অস্ট্রেলিয়ার আওয়ের মাবিল ও গারাং কুয়োল। প্রথমবারের মতো তিনজনকেই দেখা যাবে বিশ্বকাপে। শরণার্থীশিবির থেকে কাতার বিশ্বকাপে যাওয়া এই তিন তারকাকে নিয়ে এবারের আয়োজন।
আলফানসো ডেভিস: ৩৬ বছর পর এবার প্রথম বিশ্বকাপ খেলবে কানাডা। কনকাকাফ অঞ্চলের বাছাই পেরিয়ে কাতারের ভিসা পেয়েছে তারা। ফেবারিট হিসেবে নয়, কানাডীয়রা বিশ্বকাপে যাচ্ছে নিজেদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে। দলটির সবচেয়ে বড় তারকা ডেভিস। লেফট-ব্যাক ও উইঙ্গার—দুই পজিশনে খেলতে পারেন। ২২ বছর বয়সী এই তারকা বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তবে আজকের অবস্থানে ওঠে আসাটা সহজ ছিল না তাঁর। ডেভিসের জন্ম ঘানাইয়ান শরণার্থীশিবির বুদুবুরামে। গৃহযুদ্ধের সময় তাঁর লাইবেরিয়ান পিতা-মাতা দেশ ছাড়েন।
ইউএনএইচসিআর জানাচ্ছে, ডেভিসের পরিবার পরে কানাডায় অভিবাসী হিসেবে চলে আসে। বসবাস শুরু করে আলবার্টার এডমনটনে। তখন ডেভিস ৫ বছরের শিশু। এর ১০ বছর পর পেশাদারি ফুটবল শুরু তাঁর। এক বছর পর জাতীয় দলে অভিষেক। এ যেন স্বপ্নের শুরু। কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন তিনি। আর এখন চোট সত্ত্বেও বিশ্বকাপে ডেভিসকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন কানাডীয়রা।
আওয়ের মাবিল: বিশ্বকাপে খেলা বলতে গেলে যেকোনো ফুটবলারের স্বপ্ন। তবে মাবিলকে দেখে মনে হবে, এটা আর তেমন কী! ২৭ বছর বয়সে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে কাতার যাচ্ছেন কাদিজের এই অস্ট্রেলিয়ান উইঙ্গার। কিন্তু মনে তেমন উত্তেজনা নেই তাঁর। এর চেয়ে কঠিন সময় যে পার করে আসতে হয়েছে তাঁকে! জীবনের প্রথম ১০ বছর শরণার্থীশিবিরে কেটেছে এই তারকার।
মাবিলের মা-বাবা দক্ষিণ সুদানিজ। ১৯৯৪ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ছেড়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন জাতিসংঘ পরিচালিত কেনিয়ার শরণার্থীশিবির কাকুমায়। এক বছর পরে জন্ম হয় মাবিলের। শৈশব থেকে ফুটবলই ধ্যান-জ্ঞান তাঁর। প্লাস্টিক ব্যাগকে বল বানিয়ে খেলেছেন। মাবিলের পরিবার যখন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে চলে আসে, তখন তাঁর বয়স ১০। এরপর শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে এক কিশোর দলের হয়ে খেলে গোলদক্ষতায় নজর কাড়েন। উইং ধরে গতিময় দৌড় তাঁর শক্তির জায়গা। ২০১৪-১৫ মৌসুমে কিশোর বয়সে এ-লিগে অভিষেক।
অভিষেকেই ২৪ গোল, এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৮ সালে গায়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের জার্সি। অস্ট্রেলিয়া যে বিশ্বকাপ খেলছে, তাতে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। পেরুর বিপক্ষে বাছাইয়ের প্লে-অফে জিততেই হবে ম্যাচে টাইব্রেকারে জয়সূচক গোলটি করেন মাবিল।
গারাং কুয়োল: বয়স মাত্র ১৮ বছর, জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন মাত্র এক ম্যাচ। তবে বিশ্বকাপে আক্রমণভাগের জন্য কুয়োলের ওপর বিশ্বাস রাখছে অস্ট্রেলিয়া। মাবিলের মতো তাঁরও জীবন কেটেছে শরণার্থীশিবিরে। গৃহযুদ্ধের সময় আশ্রয়ের খোঁজে দক্ষিণ সুদান থেকে পালিয়ে মিসরে চলে আসে তাঁর পরিবার। অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর আগে ছয় বছর উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে ছিলেন তাঁরা। ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি অনুরক্ত কুয়োল ভলি সানসের যুব দলের হয়ে খেলা শুরু করে দৃষ্টি কাড়েন এ-লিগের এক দলের। এরপর মাত্র ১৬ বছর বয়সে যোগ দেন অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ লিগের ক্লাব সেন্ট্রাল কোস্ট ম্যারিনার্সে। গত বছর বার্সেলোনার বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে সংবাদের শিরোনাম হন কুয়োল। বার্সা তো বটেই, তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখায় নিউক্যাসলসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাব। তবে এখনো ম্যারিনার্সেই আছেন তিনি।
বিশ্বকাপ ফুটবল সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৮ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৮ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৮ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫