Ajker Patrika

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে নিয়ে বেকায়দায় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫৪
শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে নিয়ে বেকায়দায় পুলিশ

বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদকে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে পুলিশ। কয়েক বছর ধরে একের পর এক অপকর্মে নাম আসছে তাঁর। জিসানের সহযোগী পরিচয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। কিন্তু দেশে না থাকায় জিসানকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত এই সন্ত্রাসীকে নাগালে না পাওয়ায় বহু অপরাধের সুরাহা করতে পারছে না পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে জিসানের সহযোগী পরিচয়দানকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

পুলিশের দাবি, দুবাইয়ে বসে দেশে অপরাধচক্র চালাচ্ছেন জিসান। তাঁর নির্দেশে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে খুনখারাবির মতো গুরুতর অপরাধ ঘটাচ্ছে দেশে অবস্থানকারী তাঁর সহযোগীরা। এমন পরিস্থিতিতে জিসানকে আইনের আওতায় আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েও সুবিধা করতে পারেনি পুলিশ। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম বলেন, ‘জিসানের ব্যাপারে দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরেই আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে দুবাইয়ের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোকে জিসানের সর্বশেষ ছবি ও তথ্য পাঠিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর জিসানকে শনাক্তের কাজ শুরু হয়। আর কোনো অগ্রগতি নেই।’

পুলিশের কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি নেই বটে, তবে জিসান নামে অপরাধের গতি বাড়ছে নিত্যদিনই। গত ১৯ নভেম্বর পূর্ব বাড্ডার আলিফ নগরের টুটুলকে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। সময়মতো চাঁদা না দিলে পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে ২১ নভেম্বর টুটুলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে দু-তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি চাঁদার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁরা পিস্তল বের করে গুলি চালান। পরে ফোনে আবারও চাঁদা চাওয়া হয়। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা করেন টুটুল।

এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত রোববার রাজধানী ও বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রধারী সাত চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গুলশান বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী। প্রযুক্তির সহায়তায় তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে জিসানের সম্পৃক্ততার তথ্য মিলেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নাসির, কাওছার আহমেদ ইমন, জীবন হোসেন, ওমর খৈয়াম নিরু, ফারহান মাসুদ সোহান, আসলাম ও মহিন উদ্দিন জালাল। তাঁদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও ৬ হাজারটি ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও তাঁর ভাই শামিম এবং কাশিমপুর কারাগারে থাকা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী মামুনের ক্যাডার ইমন, জীবন এবং নিরুর টাকার প্রয়োজন হলে তাঁরা এলাকার বড় ভাই মহিন উদ্দিন জালালের কাছে যান। মহিন উদ্দিন টার্গেট হিসেবে বাড্ডার জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুলকে দেখিয়ে দেন। নাসিরকে ভয় দেখানোর জন্য বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করা নাসিরকে ঠিক করা হয়। কীভাবে গুলি চালাতে হবে, নাসিরকে তা শিখিয়ে দেন জীবন।

ডিবি পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, বিদেশে অবস্থানকারী, দেশের কারাগারে বন্দী এবং এলাকার স্থানীর সন্ত্রাসীদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। কাশিমপুর কারাগারে থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ডের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন দুবাইয়ে পলাতক জিসান। সেখান থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তিনি। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যারাই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধেই আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী বিদেশে পলাতক আছে, তাদের দেশে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

গত শতকের শেষ দিকে মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানী এলাকায় ত্রাসের নাম ছিল জিসান। ২০০১ সালে তাঁকে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০০৩ সালে মালিবাগের একটি আবাসিক হোটেলে গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার পর ভারত হয়ে দুবাই চলে যান জিসান। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

৩ আগস্ট বিমানবন্দরে বাধা পান তাপস, হাসিনাকে অনুরোধ করেন অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে- অডিও ফাঁস

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত