Ajker Patrika

হঠাৎ ভয়াবহ বায়ুদূষণ কুয়েতে, ঢাকার বাতাসে খানিকটা উন্নতি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ২২
Thumbnail image
ফাইল ছবি

ঢাকার বাতাসে দূষণ খানিকটা কম হলেও আজও তা অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে। দূষণের তালিকায় ঢাকার অবস্থান সরে গিয়ে শীর্ষ পাঁচে দাঁড়িয়েছে। তবে হঠাৎই রীতিমতো আতঙ্কিত হওয়ার মতো বায়ুদূষণ দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। কুয়েত শহরেই আজ বায়ুমান হাজার ছাড়িয়েছে।

কুয়েত শহরের বাতাসে আজ যে পরিমাণ দূষণ রয়েছে, তা যে কোনো সুস্থ মানুষের জন্য ভয়ানক রকমের ক্ষতিকর। সকালে কুয়েতে বায়ুর মান পরিমাপ করা হয়েছে ১০৭৮, যা ভয়াবহ পরিস্থিতি ইঙ্গিত করে। অন্যদিকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে দূষণের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। শীর্ষ চারে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার উলানবাতার শহর।

আজ রোববার সকাল ৯টার হিসাব অনুযায়ী শহরগুলোর বাতাসের এই অবস্থা ছিল। বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে বায়ুদূষণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে তাকে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

সকালের হিসাব অনুযায়ী কুয়েতের বায়ুমান ছিল ১০৮৭, যা ভয়ানক রকমের খারাপ পরিস্থিতি প্রমাণ করে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লাহোরের বায়ুমান ২৯৭। তিনে থাকা দিল্লির বায়ুমান ২৫২ ও চারে মঙ্গোলিয়ার উলানবাতার শহরে ছিল ২১১ এবং ঢাকার ২১০। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি চার শহরের বাতাসও খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে, যা ভীষণ ক্ষতিকর।

বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্যসমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

এরই মধ্যে ঢাকার দূষিত বায়ু থেকে বাঁচতে বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে—ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিকদের এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

ঢাকার বায়ুমানের অবনতি থামছে না। গত বছর থেকে এ বছর নভেম্বরে বায়ুর মান ১০ শতাংশ পর্যন্ত খারাপ হয়েছে। আর ডিসেম্বরে চলতি বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ছিল ঢাকার বাতাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত