Ajker Patrika

ডাকসুর তফসিল ২৯ জুলাই, নির্বাচন সেপ্টেম্বরে

শিক্ষা ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫ এর তফসিল আগামী ২৯ জুলাই ঘোষণা করা হবে। আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। রোববার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই তথ্য জানান ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী (সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট), অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম (উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ)।

অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা (স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট), অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম (ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগ), অধ্যাপক ড. এস. এম. শামীম রেজা (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট), প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষকদের প্রতিনিধিবৃন্দ, হল প্রভোস্টবৃন্দ, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং অংশীজনরা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী সভায় অংশীজনদের দেওয়া পূর্ববর্তী পরামর্শের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সভায় জানানো হয়, নির্বাচন উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে ৬টি নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলো হলো: কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল): ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র: জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি): রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র: বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন। সিনেট ভবন কেন্দ্র (অ্যালামনাই ফ্লোর, সেমিনার কক্ষ, ডাইনিং রুম): স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন। উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র: সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীম উদ্‌দীন হল ও শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে ভোট দেবেন।

মতবিনিময় সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ডাকসু নির্বাচনের তারিখ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট সপ্তাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে আমাদের কয়েকটি বিবেচনার বিষয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন। তাই নিরাপত্তার ব্যাপারে তাদের একটা মতামত বিবেচনা করতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জন্য তুলনামূলক সহজতর দিন বা ছুটির দিন—যেমন মঙ্গলবারে আমাদের আশপাশের এলাকা বন্ধ থাকে। তাছাড়া সেই দিন কোনো জাতীয় বড় দিবস আছে কিনা সেগুলো দেখার বিষয় রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে আমার কোনো এজেন্ডা নেই। আমরা নির্দিষ্ট কাউকে পৃষ্ঠপোষকতা করব না। আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। আপনারা আজকে এখানে ইতিবাচক মতামত প্রদর্শন করেছেন। আমি এখানে আপনাদের মতো অংশীজন হিসেবে উপস্থিত হয়েছি। এখানে যারা আছি আমরা প্রত্যেকেই ডাকসু চাই। সকলের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য—ডাকসু। এজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এদিকে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। গত ৬ জুন থেকে ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত ৫০টি নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে মোট ১৮২টি ক্যামেরা ক্যাম্পাসজুড়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত লাইট স্থাপন করা হয়েছে। প্রক্টোরিয়াল মোবাইল টিমের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, বর্তমানে এই টিমে সদস্য সংখ্যা ৩৮ এবং তারা ২৪/৭ ভিত্তিতে কাজ করছে। নিরাপত্তা গেটগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ ও পুলিশের স্ট্যাটিক ফোর্স মোতায়েন রয়েছে।

ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। কবি সুফিয়া কামাল হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের আশপাশে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশেষ টহল চালু রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসসংলগ্ন ভাসমান দোকান, মাদক সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় সভা করে প্রয়োজনীয় সব নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত