Ajker Patrika

সাংবাদিকদের কাছে ওই শিক্ষকের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর নয়, বরং সঠিক: কুবি ট্রেজারার

প্রতিনিধি
সাংবাদিকদের কাছে ওই শিক্ষকের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর নয়, বরং সঠিক: কুবি ট্রেজারার

কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘অনুপস্থিত শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় ১২তম’ এই তথ্য সাংবাদিকের কাছে সরবরাহের অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট এই তথ্যকে 'বিভ্রান্তিকর' বলে উল্লেখ করেছে। তবে এই ঘটনা তদন্তে গঠিত উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'সাংবাদিকদের কাছে ওই শিক্ষকের দেওয়া তথ্য "বিভ্রান্তিকর" নয়, বরং তথ্যটি সঠিক।'

গত রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে তথ্য সরবরাহের অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

'এই ঘটনায় হল পরিদর্শক ও ডিন অফিসের ব্যর্থতা রয়েছে' বলে মন্তব্য করেছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান।

জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েই মেধা তালিকায় ১২তম স্থানে নাম আসার ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘কুবিতে ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে মেধা তালিকায় ১২তম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরবর্তী সময়ে ৩০ নভেম্বর ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়।

এই কমিটি ৩ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এটি 'জালিয়াতি' ছিল না। বরং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষার্থী ভুল রোল নম্বর ভরাট করে। আর এ ভুলের কারণে সে রোল নম্বরধারী শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার পরেও মেধা তালিকায় চলে আসে ৷ তবে এমন ঘটনা ঘটার পেছনে কাদের গাফিলতি ছিল তা জানায়নি তদন্ত কমিটি। প্রকাশ করেনি তদন্ত প্রতিবেদনও।

এরপর ১২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটির দায়িত্ব ছিল গণমাধ্যমে এই তথ্য কীভাবে গেল তা খুঁজে বের করা।

এই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও মোবাইলে কথোপকথন বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে সাংবাদিকের সর্বশেষ কথা বলার ২৬ সেকেন্ড পরেই সংবাদটা প্রকাশ হয়েছে। এসব তথ্য থেকেই বোঝা যায় যে, মাহবুবুল হক ভূঁইয়াই সাংবাদিককে তথ্য দিয়েছে। তবে সাংবাদিকদের কাছে ওই শিক্ষকের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর নয়, বরং তথ্যটি সঠিক। আর এ ঘটনায় পরীক্ষার হল পরিদর্শক ও ডিন অফিসের ব্যর্থতা ও গাফিলতি রয়েছে।

এদিকে গণমাধ্যমে তথ্য দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় ওই ইউনিটের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল। অথচ সাংবাদিকের সোর্স আইডেন্টিফাইয়ের নামে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমিই যে তথ্য দিয়েছি সেটা প্রমাণিত না। আমি যদি দায়ী হয়েই থাকি তবে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। কীভাবে সেটি প্রমাণিত হলো, সেটি সবাইকে জানানো হোক। আমি নিজেও জানতে চাই।

এ ছাড়া তিনি ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তৎকালীন ডিন এবং বি ইউনিটের সদস্যসচিবের বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভাপতি উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুসারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনো অন্যায় হয় তবে শাস্তি হবে।

আর এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয় ৷ এটার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-সম্মান জড়িত, এটা কেন আমরা প্রকাশ করব?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত