Ajker Patrika

বেনাপোল সীমান্তে ২০টি স্বর্ণের বারসহ চোরাকারবারি আটক

শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ০৩
বেনাপোল সীমান্তে ২০টি স্বর্ণের বারসহ চোরাকারবারি আটক

ভারতে পাচারের সময় যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে ২০টি স্বর্ণের বারসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি)। বারগুলোর ওজন ২ কেজি ৩৬০ গ্রাম। এর মূল্য আনুমানিক দুই কোটি ১২ লাখ ৫২ হাজার টাকা বলেও জানানো হয়েছে। 

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল সীমান্তের পুটখালী গ্রামের পশ্চিমপাড়া থেকে ওই কারবারিকে আটক করা হয়। 

আটক পাচারকারীর নাম আতিয়ার হোসেন। তিনি বেনাপোল বন্দর থানার পুটখালী গ্রামের মহর আলীর ছেলে। 

বিজিবি জানায়, স্বর্ণের একটি বড় চালান ভারতে পাচার হবে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুটখালী বিজিবি ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা জেরদার করেন। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি বাইসাইকেলযোগে সীমান্তের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর গতি রোধ করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শরীরে তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা ২ কেজি ৩৬০ গ্রাম ওজনের ২০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। 

 ২১ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশীদ আনোয়ার জানান, আটক পাচারকারীর বিরুদ্ধে স্বর্ণ পাচার আইনে মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, সীমান্ত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী দুবাই, মালয়েশিয়া, আফ্রিকা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে দেশে আসে স্বর্ণের চালান। পরে ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে করে একটি গ্রুপ স্বর্ণ নিয়ে যায় দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায়। সীমান্তে নির্ধারিত স্থানে স্বর্ণের চালানটি হাতবদল হয়ে চলে যায় স্থানীয় এজেন্টের হাতে। স্থানীয় এজেন্টরা সেই স্বর্ণের চালান সীমান্ত পার করে পৌঁছে দেয় ভারতে। স্বর্ণ বিক্রির টাকায় এপারে আসে মাদকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্য। 

স্থানীয়রা বলছে, পাচারের সঙ্গে জড়িত বহনকারীরা আটক হলেও গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় বন্ধ হচ্ছে না স্বর্ণ চোরাচালান। বিজিবি বলছে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে সীমান্ত এলাকা রয়েছে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরায়। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে এসব জেলার সীমান্ত দিয়ে পাচারকালে প্রায় ১৩০ কোটি টাকার স্বর্ণ জব্দ করেছে বিজিবি। জব্দকৃত স্বর্ণের পরিমাণ ১৬০ কেজি। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অধীনে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির সাতটি ব্যাটালিয়ন এসব স্বর্ণ জব্দ করে। এসব ঘটনায় আটক করা হয় ৬৯ জনকে। 

সব থেকে বেশি স্বর্ণ আটক করে বেনাপোল সীমান্তবর্তী খুলনা ব্যাটালিয়ন ২১ বিজিবি। এই সময়ে তারা ৬৩ কেজিরও বেশি স্বর্ণ উদ্ধার করে। এই সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ৯২ কেজি স্বর্ণ জব্দ করেছে যশোর ব্যাটালিয়ন ৪৯ বিজিবি। এ ছাড়া মহেশপুর ব্যাটালিয়ন ৫৮ বিজিবি ৩০ দশমিক ৯২ কেজি, সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন ১৮ দশমিক ৪৫ কেজি, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন ১৭ দশমিক ৭৫ কেজি স্বর্ণ জব্দ করে। 

এদিকে বিজিবির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় স্বর্ণ চোরাচালান রোধে কাজ করে পুলিশ, শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব বাহিনীও মাঝেমধ্যে স্বর্ণ উদ্ধারসহ চোরাচালানে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে। তবে তাদের হাতে ধরা পড়া স্বর্ণ বা পাচারকারীর সংখ্যা কম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত