Ajker Patrika

ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রতারণা ঠেকাতে কঠোর নিয়ম করল ইতালি

ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রতারণা ঠেকাতে কঠোর নিয়ম করল ইতালি

ইনস্টাগ্রামে প্রায় ৩ কোটি ফলোয়ার। চাকচিক্যময় সেলফি তুলে আর ফ্যাশন কনটেন্ট দিয়েই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ইতালির কিয়ারা ফেরাগনি। তাঁকে বলা হয় ইতালির সবচেয়ে ক্ষমতাবান ইনফ্লুয়েন্সারদের একজন। তবে, এখন নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে বিপদে পড়েছেন কিয়ারা। ক্রিসমাস কেক নিয়ে বিতর্কের জের ধরে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। 
 
কেক তৈরির কোম্পানি ও ফেরাগনির দাবি করেছিলেন, ক্রিসমাস কেক বিক্রি করে পাওয়া অর্থ তুরিন শহরের এক শিশু হাসপাতালে দান করা হবে। 

এ ক্যাম্পেইনের আগেও বালোক্কো নামে ওই কেক কোম্পানি হাসপাতালটিতে ৫০ হাজার ইউরো দান করেছিল। কিন্তু এরপর আর কোনো ধরনের অনুদান দেয়নি। ইতালির অ্যান্টি–ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের মতে, ক্রিসমাসের ওই ক্যাম্পেইন থেকে ১০ লাখ ইউরোরও বেশি লাভ করেছেন ফেরাগনি।

গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করায় গত ডিসেম্বরে ফেরাগনি ও কোম্পানির মালিক আলেসান্দ্রা বালোক্কোকে যথাক্রমে ১০ লাখ ইউরো এবং ৪ লাখ ২০ হাজার ইউরো জরিমানা করে পুলিশ। 

এ ঘটনার পর অশ্রুসিক্ত চোখে ফলোয়ারদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ফেরাগনি। এ ঘটনাকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি হাসপাতালে ১০ লাখ ইউরো দান করে দেবেন। 

সম্প্রতি ইনফ্লুয়েন্সারদের ক্ষমতা ও পণ্যের প্রচারণা থেকে পাওয়া অর্থ নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে ইতালিতে। বিশেষ করে এ প্রচারণাগুলোকে যখন দাতব্য কাজ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তখন মানুষ বিভ্রান্ত হয়। চলতি সপ্তাহে রাজধানী মিলানের প্রসিকিউটররা বলেন, জালিয়াতির অভিযোগে ফেরাগনি এবং বালোক্কোর কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্ত করছিলেন তাঁরা।  

বিতর্কের পর থেকেই ২ লাখের মতো ফলোয়ার হারিয়েছেন ফেরাগনি। এমনকি কোকাকোলার মতো স্পন্সরও হারিয়েছেন তিনি। 

গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ইতালির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ইনফ্লুয়েন্সার এবং সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য কঠোর নিয়ম ঘোষণা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য ১০ লাখের বেশি ফলোয়ার থাকলে ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিওর শুরুতে স্পন্সর ও বিজ্ঞাপনের বিবরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অভিযুক্ত ইনফ্লুয়েন্সারকে ৬ লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে। 

ইতালির যোগাযোগ শিল্পের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যাগকমের প্রেসিডেন্ট জিয়াকমমো লাসোরেল্লা বলেন, পরবর্তীতে নতুন এ নিয়ম তুলনামূলক কম ফলোয়ারের ইনফ্লুয়েন্সারদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল দুনিয়া দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং তাৎক্ষণিক মানুষের কাছে পৌঁছায় এবং এর নির্দিষ্ট নিয়মকানুনও রয়েছে। এ ক্ষেত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন বাধ্যবাধকতা আরোপ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ফেরাগনি বলছেন, জালিয়াতির তদন্ত নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন। যদিও নিজের ভাবমূর্তি রক্ষায় শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে প্রভাবিত করেছেন তিনি। 

বিতর্কটির শুরু হয় ২০২২ সালের শেষের দিকে। ৩৬ বছর বয়সী ফেরাগনি ইতালির পিদমন্ত–ভিত্তিক কেক কোম্পানি বালোক্কোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের প্যান্ডোরো ক্রিসমাস কেকের প্রচার করেন। ফেরাগনি যে কেকের ক্যাম্পেইন করেছিলেন সেটির দাম রাখা হয় ৯ ইউরো, এটি প্রকৃত দামের প্রায় তিনগুণ। কেক বিক্রির টাকা শিশু হাসপাতালে দান করা হবে বলে প্রচার করেছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত