Ajker Patrika

গেস্টরুম বন্ধ ঘোষণায় ফেসবুকে আনন্দ প্রকাশ করায় ৫ শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ

প্রতিনিধি, ঢাবি
গেস্টরুম বন্ধ ঘোষণায় ফেসবুকে আনন্দ প্রকাশ করায় ৫ শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ

গেস্টরুমে নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর এই সংস্কৃতি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গ্রুপ। এ নিয়ে খুশিতে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের অভিযুক্তরা ওই হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন-২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম আলিফ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের লালন হোসাইন, মার্কেটিং বিভাগের আসিফ হোসাইন এবং সংগীত বিভাগের ওয়াজিহ তওসিফ। তাঁরা স্যার এফ রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী এবং হলের পদপ্রত্যাশী সালেহ উদ্দিন সাজু ও মুনিম শাহরিয়ার মুনের অনুসারী। তাঁরা উভয়েই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। 

হল সূত্র জানায়, প্রথম বর্ষের (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) পাঁচজন শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে ডেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেধড়ক মারধর করা হয়। 

এর আগে গত বুধবার রাতে প্রথম বর্ষের সবাইকে গেস্টরুমে ডেকে এনে জানানো হয় পরীক্ষা, হল সম্মেলন ইত্যাদি কারণে তাদের গেস্টরুম বন্ধ থাকবে। এই খুশিতে প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে ‘Eid Mubarak’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্ট দেন। এরপরই বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাঁদের সিঙ্গেল গেস্টরুমে ডেকে নেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁদের জেরা ও মারধর করা হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ফেসবুকে লেখার কারণেই পাঁচজনকে আলাদা করে রুমে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে তাঁদের চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারা হয়। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন-২০১৯-২০ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বুলবুল আহমেদ, রানা হোসাইন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন এবং ফিন্যান্স বিভাগের ইমদাদুল ইসলাম ইমন। ‘নিরাপত্তার কারণে’ ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে রাজি হননি। 

তবে অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম আলিফ বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। হলে গতকাল রাতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। অন্য অভিযুক্তরাও একই দাবি করেছেন। 

পদপ্রত্যাশী সালেহ উদ্দিন সাজু বলেন, এ রকম ঘটনা সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। আমি ভুক্তভোগীদের ডেকে জিজ্ঞেস করেছি। কিন্তু তারা কেউ কিছু বলেনি। অভিযোগই যদি জানতে না পারি তাহলে আমি কী করবো? তবে আমি সবাইকে শান্ত থেকে পড়াশোনা ও অন্যান্য বিষয়ে মনযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি দেখতেছি। কেউ যদি আমাদের সংগঠনে আদর্শবিরোধী, নীতি নৈতিকতা বিরোধী কোনো কাজ করে, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত