Ajker Patrika

ওয়ালটন কারখানায় ইফতার খাওয়ার পর ৩ শ্রমিকের মৃত্যু, সড়ক অবরোধ

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০১: ১৩
ওয়ালটন কারখানায় ইফতার খাওয়ার পর ৩ শ্রমিকের মৃত্যু, সড়ক অবরোধ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ওয়ালটন কারখানায় ইফতার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ শ্রমিক মারা গেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্তও রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হুমায়ূন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইফতারের পর কয়েকজন শ্রমিক বাইরে থেকে কোমলপানীয় জাতীয় পানীয় এনে খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁদের মৃত্যু হয়। কারখানা থেকে সরবরাহকৃত খাবার থেকে সমস্যা হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আজ রোববার রাত ১০টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ। তবে, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মারা যাওয়া তিন শ্রমিকের নাম পরিচয় জানাতে পারেননি। 

সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, ‘রোববার ইফতারের সময় কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানায় ইফতার খেয়ে কয়েক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ শ্রমিকদের কাশিমপুর এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে ৩ শ্রমিক মারা গেছেন।’ 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। এতে আব্দুল্লাহপুর চন্দ্রা সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে বারইপাড়া থেকে কালিয়াকৈরর চন্দ্রা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান বলেন, ‘ইফতারের সময় ওয়ালটনের ক্যান্টিনে ইফতারের সঙ্গে ট্যাং শরবত খেয়ে কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অপর একজন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

শামসুর রহমান আরও জানান, মারা যাওয়া শ্রমিকেরা হলেন— সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালি থানার কুরকি মধ্যপাড়া গ্রামের বুদ্ধু মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদ হোসেন (৩০), টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুল বারেক (৪৮) ও টাংগাইল জেলার সদর থানার গোসাইর জুয়ার গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফ আলী (৩০)। তাঁরা ওয়ালটন কারখানার পাউডার কোটিং শাখার শ্রমিক ছিলেন।

ঘটনার পরপরই গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্রমিক মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ কাজ করছে।’

রাত পৌনে ১২টার দিকে কালিয়াকৈর উপজেলার ইউএনও বলেন, ‘সোয়া ১১টা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি। পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হুমায়ূন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সব কর্মীকে ইফতার সরবরাহ করি। কয়েকজন ইফতার করার পর বাইরে থেকে এক ধরনের কোমলপানীয় কিনে খান। এরপরই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের আমাদের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা যান।’

হুমায়ূন কবির আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে।’

পরে কারখানার ডেপুটি অপারেটিভ ডাইরেক্টর মো. সুজন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যতোদূর জেনেছি, শ্রমিকেরা খাবার খেয়ে নয়, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত