Ajker Patrika

সীমান্ত অপরাধ শূন্যে নামিয়ে আনতে ৪ পরামর্শ দেওয়ার পর বাতিল করলেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৮: ৫৩
সীমান্ত অপরাধ শূন্যে নামিয়ে আনতে ৪ পরামর্শ দেওয়ার পর বাতিল করলেন হাইকোর্ট

বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যকরীভাবে রক্ষা, আন্তরাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা এবং জাতীয় রাজস্ব আয় ফাঁকি প্রতিরোধে জাতীয় সংসদকে চার পরামর্শ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার সেই পরামর্শগুলো বাতিল করে সংশোধিত রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। 

ওই মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাইকোর্ট তাঁর রায়টি সংশোধন করেছেন। সংশোধিত রায়ে আগের দেওয়া পরামর্শগুলো রহিত করা হয়েছে।’ 

চোরাচালানবিরোধী অভিযানে যশোর সীমান্তে ভারতীয় শাড়ি উদ্ধারের ঘটনায় বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) করা মামলার আসামি জাকির হোসেনের সাজা বাতিলের রায়ে চারটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩ আগস্ট বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ১১ জুলাই প্রকাশ করা হয়। যা আজ সোমবার সংশোধন করা হলো। 

রায়ে সংসদকে দেওয়া চার পরামর্শ হলো—সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সম্পত্তি ঘোষণা করা। উক্ত ঘোষণার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ সকলকে ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করে সমমূল্যের সরকারি খাস সম্পত্তি থেকে বরাদ্দ প্রদান। সীমান্ত লাইন থেকে ৮ কিলোমিটার ভূমি সম্পূর্ণ ফাঁকা রাখা। যাতে ৮ কিলোমিটার দূর থেকে পরিস্কার দেখা যায়। এছাড়া সীমান্ত রেখা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার মধ্যবর্তী স্থান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের যাবতীয় স্থাপনা, প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকান্ডের জন্য সংরক্ষিত রাখা। 

মামলার বিবরনে জানা যায়, ১৯৮৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা যশোরের চাচড়া রায় পাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামি জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে ১৫টি ভারতীয় শাড়ী উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় ১৯৮৮ সালের ১৩ এপ্রিল তিন বছরের সাজা দেন বিচারিক আদালত। পরে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জাকির। 

হাইকোর্ট রায়ে বলেন, The Record of Jute Growers (Border Areas) Act, 1974 এর ধারা ২ (ক) পর্যালোচনায় এটি কাঁচের মতো স্পষ্ট যে, সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল পর্যন্ত এলাকাকে সরকার ১৯৭৪ সালে সীমান্ত এলাকা বা Border Area মর্মে ঘোষণা করেছে। সুতরাং এটা দ্ব্যার্থহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশ রাইফেলস বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এখতিয়ারাধীন এলাকা সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল। 

রায়ে বলা হয়, যেহেতু এই মামলায় বিডিআর সদস্যরা সীমান্ত এলাকা তথা ১০ মাইল সীমানার বাইরে গিয়ে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করেছে, তাই তাদের উক্ত তল্লাশী অভিযান এখতিয়ারবিহীন। ফলে এখতিয়ারবিহীন অভিযানের মাধ্যমে দায়েরকৃত মামলাও এখতিয়ারবিহীন। সার্বিক পর্যালোচনায় এটি প্রতীয়মান যে, বিজ্ঞ বিচারিক আদালত যে রায় প্রদান করেছেন তা হস্তক্ষেপযোগ্য। আপিলটি মঞ্জুর করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত