Ajker Patrika

তথ্য দিতে নারাজ কর্মকর্তা

নাঈম ইসলাম, ধামরাই
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ২০
তথ্য দিতে নারাজ কর্মকর্তা

সারা দেশে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামারিদের মধ্যে প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। তবে ধামরাইয়ে এ প্রণোদনার প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও উঠেছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, এ বিষয়ে তথ্য দিতেও নারাজ ধামরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান। তথ্য অধিকার আইনে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন করেও পাওয়া যায়নি তথ্য।

উপজেলার খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাঁস, মুরগি কিংবা গরুর খামার নেই এমন অনেকেই প্রথম দফায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে প্রণোদনা পেয়েছেন। আবার প্রথম দফায় যাঁরা প্রণোদনা পেয়েছেন, দ্বিতীয় দফায়ও তাঁরা পেয়েছেন প্রণোদনার অর্থ। তবে এ ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে প্রথম দফায় পাওয়াদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে।

এমন অনিয়ম ওঠার পর দ্বিতীয় দফায় কারা প্রণোদনা পেয়েছেন, তার তালিকা চাওয়া হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে। দেড় মাস আগে তাঁর কাছে এ তালিকা চাওয়া হয়। তবে তিনি সে তালিকা দিতে রাজি হননি। তালিকা কেন দেবেন না, জানতে চাইলে তিনি তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করতে বলেন।

আবেদনের এক মাস পর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান উপজেলার যেকোনো একটি ইউনিয়নের তথ্য দিতে রাজি হন। কিন্তু আবেদনে ধামরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের তথ্য চাওয়া হয়েছিল বলে তাঁকে জানানো হয়। পরে তিনি ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) মো. মোস্তানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানান, পুরো তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।

ডা. সাইদুর জানান, যাঁরা প্রণোদনা পেয়েছেন, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর ও ঠিকানা দেওয়া যাবে না। শুধু নাম নিতে পারেন। এই বলে তিনি তথ্যের বিষয়ে আর কোনো কথা না বলে তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) মো. মোস্তানুর রহমান বলেন, ‘আমার জানামতে, কারও ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার সুযোগ নাই। এটা আমি শুনেছি, ভুলও হতে পারে আমার। এ বিষয়ে আমার প্রকল্প পরিচালককে আপনি ফোন করতে পারেন।’

ধামরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান আপনার সঙ্গে কথা বলেই অর্ধেক তথ্য দেওয়া যাবে বলে জানান। তথ্য অধিকারে আবেদন করেও কেন তথ্য পাব না—এমন প্রশ্নের উত্তরে মোস্তানুর রহমান বলেন,, ‘না না, কেন তথ্য পাবেন না? তাঁদের কাছে তো তথ্য আছে, দেবে না কেন? অবশ্যই দেবে।’

উল্লেখ্য, প্রথম দফায় প্রাণিসম্পদের ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে প্রণোদনার টাকা বিতরণে উপজেলার ভাড়াড়িয়া ইউনিয়ন, ধামরাই ইউনিয়ন, পৌরসভা, নান্নার ইউনিয়নসহ প্রায় ইউনিয়নেই অনিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়। একজনের খামার দেখিয়ে আরেকজনের নামে টাকা দেওয়া হয়। আবার যাঁর নামে টাকা আসার কথা, তা তাঁর নামে না এসে অন্যজনের মোবাইল নম্বরে চলে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।

ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের নামেও প্রণোদনার টাকার তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু তিনিও কোনো প্রণোদনার টাকা পাননি। একই ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোলাইমান হোসেনের নামও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকায় থাকলেও তিনিও টাকা পাননি। এ অনিয়ম নিয়ে গত ১৩ আগস্ট দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘খামার নেই, তবুও খামারি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত