Ajker Patrika

চুরির পর বিক্রি মালিকের কাছেই

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২২, ১২: ৩৯
চুরির পর বিক্রি মালিকের কাছেই

বৈদ্যুতিক মিটার চুরির পর সেখানে থাকা বোর্ডে একটি মোবাইল ফোন নম্বর রেখে যায় চোর চক্র। পরে ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে চক্রের দাবি করা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বিকাশ, রকেট বা নগদের মাধ্যমে পরিশোধ করলে নির্দেশিত কোনো নির্জন স্থানে মিটার রেখে যায়। পরে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দিলে পরিত্যক্ত স্থান থেকে চুরি যাওয়া মিটার সংগ্রহ করেন ভুক্তভোগী। তবে এই কাজে চক্রটির ওপর বিশ্বাস রাখতে হয় ভুক্তভোগীদের। কারণ, এই খবর পুলিশকে জানানো হলে আবার মিটার চুরি করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

মানিকগঞ্জে ছয় মাসে দুই শতাধিক বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত চোর চক্রকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা, মিলমালিকসহ সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন।

সম্প্রতি ধামরাই উপজেলার নান্দেশ্বরী এলাকায় রাতের কোনো একসময় চোর চক্র মেসার্স শহীদ টিম্বার অ্যান্ড স’মিল থেকে বিশেষ কায়দায় বৈদ্যুতিক মিটার চাবি দিয়ে খুলে দ্রুত সটকে পড়ে। চুরির এই দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে একই কায়দায় সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া এলাকার আব্দুল করিম মিয়ার চালের মিলের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়। চলতি মাসে সাটুরিয়া উপজেলার সাহেবপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের চালের মিলের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়। এভাবে গত ছয় মাসে জেলায় দুই শতাধিক বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে।

সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া এলাকার আব্দুল করিম মিয়া জানান, চুরি যাওয়া মিটারের বদলে নতুন মিটারের সংযোগ নিতে ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচসহ বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হয় গ্রাহকদের। এ কারণে চোরের প্রস্তাবে রাজি হন মিটারের মালিকেরা। আর চোর চক্র সেই সুযোগটি নিয়ে থাকে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাসে মানিকগঞ্জ সদর-সাটুরিয়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৪১টি, ১০ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৩৬টি, ১৫ কেভিএ ট্রান্সফরমার ১০টি, ২৫ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৯টি এবং ৩৭ কেভিএ ট্রান্সফরমার ৩টিসহ দুই শতাধিক বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব মিটার ও ট্রান্সফরমারের বর্তমান বাজারমূল্যে প্রায় ২ কোটি টাকা।

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুর রশিদ মৃধা বলেন, ‘মিটার চুরির বিষয়টি জানার পর জেলা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে একাধিকবার বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সেখানে উপস্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, তারা অভিযান পরিচালনা করছে।’গ্রাহকদের সচেতন করতে মাইকিং করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা জানান, বৈদ্যুতিক মিটার চুরির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। খুব শিগগিরই চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত